Game

2 days ago

Thiago Almada: থিয়াগো আলমাদা: রাস্তা থেকে উঠে এসে যেভাবে মেসির উত্তরসূরি

Thiago Almada
Thiago Almada

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: থিয়াগো আলমাদার নাম শুনলে প্রথমেই মনে আসে এই কথা। সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবে কেউ জিজ্ঞেস করতেই পারে, কেন ব্যতিক্রম? ২০২২ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আর্জেন্টাইন ক্লাব ভেলেজ সার্সফিল্ড ছেড়ে আলমাদা পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব আটলান্টা ইউনাইটেডে।

ইউরোপ কিংবা লাতিন আমেরিকার ফুটবলাররা সাধারণত ক্যারিয়ারের শেষ দিকে গিয়ে বেছে নেনে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাবগুলোকে। সেখানে একজন তরুণ আর্জেন্টাইন ফুটবলার ক্যারিয়ারের শুরুতেই পাড়ি জমাচ্ছেন আটলান্টিক পাড়ের দেশে। ব্যতিক্রম নয়তো কী!

আলমাদা যতটা ব্যতিক্রম ততটা অনালোচিতও বটে। এমনকি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হওয়ার পরও! কাতার বিশ্বকাপের পর শিরোপাজয়ী আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে, তখন আলমাদাকে তেমন কোনো আলাপই হয়নি। কেউ চাইলে অবশ্য বলতেই পারেন, পুরো বিশ্বকাপে যিনি মাত্র ৬ মিনিট খেলেছেন, তাঁকে নিয়ে কি এমন আর আলোচনা হবে!বিশ্বকাপে বেশির ভাগ সময় বেঞ্চে বসে কাটলেও এত কাছ থেকে দেশকে বিশ্বকাপ জিততে দেখা এবং সেই দলের অংশ হওয়া নিশ্চিতভাবেই ২০ বছর বয়সী একজন ফুটবলারের জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতা নিয়েও কখনো খুব একটা উচ্চকিত হতে দেখা যায়নি আলমাদাকে। এই তরুণ ফুটবালের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে বিশ্বকাপ জয়ের পরপর কিছু ছবি পোস্ট করা ছাড়া তেমন কিছুই আর দেখা গেল না। অদ্ভুত এক নির্লিপ্ততাই বটে।

আলোচনা যেমন নিজে করেননি, তেমনি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও আলমাদাকে নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা হয়েছে সামান্য। তবে কোলাহলের বাইরে থেকেও নিজের কাজটা ঠিকঠাক করে গেছেন এ মিডফিল্ডার। যখনই কোনো সুযোগ পেয়েছেন, চেষ্টা করেছে তার পূর্ণ ব্যবহারের। যা এখন তাঁকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষত গতকাল চোখধাঁধানো এক গোলে আর্জেন্টিনাকে জেতানোর পর আলমাদা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

আর্জেন্টিনা দলে খুব একটা সুযোগ না পেলেও আলমাদা বরাবরই ‘আন সাং হিরো’। জাতীয় দলের হয়ে আলমাদা এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩ গোল। এই ম্যাচগুলোতে সব মিলিয়ে তিনি মাঠে ছিলেন মাত্র ২৪৯ মিনিট। অর্থাৎ মিনিট বিবেচনা করলে খেলেছেন তিন ম্যাচেরও কম।জাতীয় দলে জায়গা পেতে লড়াই করা আলমাদার জীবনটাই অবশ্য সংগ্রামের। আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের রাস্তা বারিও এজেরসিতোতেই বেড়ে ওঠা তাঁর। একই রাস্তা থেকে উঠে এসেছিলেন কার্লোস তেভেজের মতো তারকা।

আর এই রাস্তায় যারা বেড়ে ওঠেন, তাদের জন্য দুটি বিষয় অনিবার্য, সংগ্রাম ও ফুটবল। একদিকে আলমাদা ফুটবল পায়ে যেমন ফুল ফুটিয়েছেন, অন্য দিকে ফল ও সবজি বিক্রি করে সাহায্য করতেন মা–বাবাকে। কিন্তু ফুটবলের প্রতি টান এবং প্রতিভার ঝলক তাঁকে সে জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছে।আর প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করে আলমাদা এখন এসেছেন বর্তমান অবস্থানে। আলমাদাকে ‘অসাধারণ ফুটবলার’ বলে মন্তব্য করেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল বিশ্লেষক দিয়েগো লাতোরে। পাশাপাশি তাঁর খেলাকে লাতোরে বিশেষায়িত করেছেন এভাবে, ‘স্টাইল অব দ্য স্ট্রিট’। মানে খেলার ধরন বা কৌশল খুব নিখুঁত বা অভিজাত কিংবা নিয়মতান্ত্রিক না। কিন্তু কার্যকারীতা ও নান্দনিকতায় একটু কমও নয়।  

আর্জেন্টিনা দলে আলমাদার জায়গা না পাওয়ার মূল কারণ অবশ্য দলটির তারকাবহুল আক্রমণভাগ। লিওনেল মেসি, দিবালা কিংবা মার্তিনেজদের মতো পরীক্ষিতদের কারণে নিয়মিত হতে পারছেন না আলমাদা। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে আর্জেন্টিনা দলের একটি পজিশনে যে আলমাদার নাম লেখা থাকবে, তা অনেকটাই নিশ্চিত।

You might also like!