
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল, ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই জুবিন গর্গের রহস্যমৃত্যু মামলায় চার্জশিট জমা দেবে অসম সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’। সেই পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার নির্ধারিত সময়েই আদালতে পেশ করা হলো প্রায় আড়াই হাজার পাতার চার্জশিট। সেখানে চারজনের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের অভিযোগ এনেছে তদন্তকারী সংস্থা।
চার্জশিটে যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই প্রয়াত শিল্পীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মোহন্ত, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, তাঁর ব্যান্ডের ড্রামার শেখর জ্যোতি গোস্বামী এবং গায়িকা অমৃতপ্রভা মোহন্ত। পাশাপাশি, জুবিনের তুতোভাই ও অসমের প্রাক্তন পুলিশ অফিসার সন্দীপন গর্গের বিরুদ্ধেও অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে গিয়ে সাঁতার কাটার সময় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় জুবিন গর্গের। সেই ঘটনাকে প্রথমে দুর্ঘটনা বলা হলেও, ধীরে ধীরে সন্দেহ দানা বাঁধে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নির্দেশে সেপ্টেম্বর মাসেই গঠন করা হয় ‘সিট’। গত তিন মাসে প্রায় ৩০০ জনকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। এমনকি তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি দল সিঙ্গাপুরেও যায়।
৪ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়ার পরই জুবিনের সমাধিস্থলে ফুল, মোমবাতি হাতে ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তরা। সেখানে সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুবিন-পত্নী গরিমা সাইকিয়া। তিনি জানান, “আমি তো ভাবতেই পারছি না, জুবিনের মতো মানুষকেও কেউ নিজের স্বার্থে খুন করতে পারে! গোটা জীবন যে মানুষটা অন্যের জন্য বিলিয়ে দিল। নিজের সময়-অর্থ, মন সবটাই তো চিরকাল বিলিয়ে গিয়েছে ও।” গরিমার সংযোজন, “গত তিন মাস ধরে ‘সিট’ প্রচুর পরিশ্রম করেছে। যার ফলাফল মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। এখন সবকিছু বিচার ব্যবস্থার উপর নির্ভর করছে। দোষী সাব্যস্তদের কঠোরতম শাস্তি পেতে হবে।”
এর আগে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছিলেন, “১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিনের রহস্যমৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করব না। ডিসেম্বর মাসের ১৭ তারিখ জুবিন গর্গের ‘খুনে’র চার্জশিট জমা দিতে হবে। যদিও আমি ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলেছি। আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত। বিদেশে কোনও ঘটনা ঘটলে চার্জশিট দাখিলের আগে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও বিষয়টি জানিয়েছি ইতিমধ্যে, যাতে উনি দ্রুত অনুমোদন দিতে পারেন। সিট-এর তরফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি গিয়েছে। অনুমোদন পেলে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চার্জশিট দাখিল করব।” প্রসঙ্গত, এই মামলায় এর আগেই ধাপে ধাপে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ‘সিট’। তদন্তের পরবর্তী ধাপ এখন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে।
