
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হুমায়ুন কবীর আরও একবার বিতর্কে জড়ালেন। এবারের অভিযোগ হলো, তিনি সৌদি আরবের প্রতিনিধি সেজে রাজ্যেরই দুই ইমাম বা ক্কারীকে ব্যবহার করে মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত করেছেন। বহু মানুষ এই কাজকে ধর্মীয় প্রতারণা বলে বিবেচনা করছেন। অন্যদিকে, হুমায়ুনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাঁকে অপদস্থ করতে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এই পরিকল্পনা করেছেন। তবে, সিদ্দিকুল্লা সেই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
আসলে গত ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় তথাকথিত ‘বাবরি’ মসজিদের শিলান্যাসের আগে হুমায়ুন দাবি করেছিলেন, তাঁর মসজিদ শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে দেশবিদেশ থেকে বহু অতিথি আসবেন। কর্মসূচিতে যোগ দিতে সৌদি আরব থেকে আসছেন দুই ‘ক্কারী’ অর্থাৎ মক্কার ইমাম। সেই মতো দুই ইমামকে কেন্দ্রস্থলে রেখে পুরো কর্মসূচি হয়। বহু ধর্মপ্রাণ মুসলিম তাতে যোগও দেন। কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, ওই কর্মসূচিতে সৌদি থেকে কোনও ইমাম আসেননি। যাঁদের কেন্দ্রস্থলে রেখে অনুষ্ঠান হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন মুর্শিদাবাদেরই দৌলতাবাদের বাসিন্দা সুফিয়া। দ্বিতীয় জন, শেখ আবদুল্লা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। স্বাভাবিকভাবেই বহিষ্কৃত তৃণমূল বিধায়কের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
যদিও হুমায়ুনের দাবি, তাঁকে অপদস্ত করার চেষ্টা হয়েছে। তিনি সৌদির ইমাম আনার জন্যই এক মধ্যস্থতাকারীকে দায়িত্বভার দিয়েছিলেন। এমনকী তাঁর আসা যাওয়া থাকার খরচও ওই মধ্যস্থতাকারীকে দেন। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন মক্কা থেকে দু’জন ক্কারীকে নিয়ে আসবেন। কিন্তু পরে জানতে পারেন সৌদি থেকে কোনও ক্কারী আসেননি। ওই দুজন রাজ্যেরই। বিতর্কিত বিধায়ক বলেন, “আমি মধ্যস্থতাকারীদের সম্পূর্ণ ভরসা করেছিলাম। বিমানের টিকিট ও অন্য খরচ পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। আর কোনও খোঁজখবর নিতে পারিনি। এখন শুনছি ওরা রাজ্যের বাসিন্দা।” হুমায়ুনের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন মধ্যস্থতাকারী খন্দকার ইউসুফও। তিনি বলেন, “টাকা পয়সা হুমায়ুন সাহেব পাঠালেও শেষ মুহূর্তে আর সৌদি থেকে মেহমান আনা সম্ভব হয়নি। ভিড়ের মধ্যে মঞ্চেও আর বলা হয়ে ওঠেনি যে ওঁরা সৌদি আরবের নন। আমার উপরে দায়িত্ব ছিল, আমি সেই দায়িত্ব পালন করতে পারিনি।”
বিতর্কিত বিধায়ক নিশানা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে। হুমায়ুনের দাবি, “গোটা পরিকল্পনার মাস্টারমাইন্ড সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। আমাকে অপদস্থ করতে তিনিই মধ্যস্বত্ত্বকারীদের প্রভাবিত করেছেন।” যদিও সেই অভিযোগ ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা। তিনি বলছেন, “আমি নিজে একটা সংগঠন চালাই। যার অধীনে ১১০০ মাদ্রাসা চলে। আমার এসব লোককে অপদস্থ করার দরকার হয় না। নিজে যা করছেন করুন, আমাকে টানবেন না।”
