দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ যখন একদল উগ্র ধর্মান্ধ মানুষ ধর্মে-ধর্মে সংঘাত লাগাতে ব্যস্ত,ঠিক তখনই বেঙ্গালুরুর এক গ্রাম এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা দিলো। সেখানে ‘কুরুক্ষেত্র’ পালায় হিন্দুদের সঙ্গে কোমর বেঁধে মঞ্চে নামলেন মুসলমানেরা। দুই ধর্মের অভিনেতা এবং অন্য কলাকুশলীদের প্রদর্শনে জমে উঠল ‘হোলনাইট’ যাত্রাপালার আসর। এই 'কুরুক্ষেত্র' দেখতে ভিড় হয়েছিল ব্যাপক। কারোর মনে হয় নি এই এই পালা কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের। বরং মনে হয়েছে এটা সর্বধর্ম সমন্বয়ের পালা।
এই পালার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো টানা ১০ ঘন্টা ধরে চললো ধর্মক্ষেত্র 'কুরুক্ষেত্র' পালার অভিনয়। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ যাত্রা শুরু হয়, তা শেষ হয় রবিবার ভোররাতে। পালায় মোট ৩৩ জন অংশ নিয়েছিলেন। তার মধ্যে ২০ জন ছিলেন মুসলমান। খোদ ধর্মরাজের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন স্থানীয় স্কুলশিক্ষক আবদুল রাজাক। এছাড়াও দুর্যোধন এছাড়াও দুর্যোধন সেজেছিলেন নায়াজ খান নামের এক স্থানীয় যুবক। সব মিলিয়ে ১৮ জন মুসলমান অভিনয় করেন পালায়। ফলে সামগ্রিকভাবে হিন্দু-মুসলমানের এক অপূর্ব মেলবন্ধন তৈরি হয়। এটাকেই রবীন্দ্রনাথ 'মহামানবের মিলন ক্ষেত্র' বলেছেন।
মেলার মাঠে অন্তত ১৫ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল।অনেকেই ঘর থেকে খাবার নিয়ে এসে বসেছেন ওই পালা দেখতে। দূরদূরান্তের গ্রাম থেকেও দর্শেকেরা এসেছিলেন। বৃথা যায়নি তাঁদের পরিশ্রম। কারণ ধর্মকে প্রাধান্য দেননি শিল্পীরা। বরং শিল্পই বড় হয়ে ওঠে। অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জনই ছিল কলাকুশলীদের মূল লক্ষ্য। বেঙ্গালুরুর মূল শহরের কিছু দূরে হালেনাহাল্লি নামে গ্রামেই এই পালা অনুষ্ঠিত হয়। হালেনাহাল্লি গ্রামে মেরেকেটে ১০০ পরিবারের বাস। এর মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২০টি পরিবার। সকলে মিলে পালা অভিনয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন বছর দুই আগে। সেই মতো সম্প্রতি হোলনাইট পালার প্রদর্শন হয়। তৈরি হয় ধর্ম-বর্ণের উর্দ্ধে উঠে এক মহামিলনের নিদর্শন।