দুর্গাপুর, ২১ ফেব্রুয়ারি : অকাল বর্ষণের ফলে নিকাশির বেহাল দশা ফের সামনে এল। জমা জল উপচে মানকরের ৬৯ নম্বর আইসিডিএস সেন্টার কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রান্নাঘরেও ঢুকে পড়েছে নোংরা জল, তবু তার মধ্যেই কোনও রকমে রান্না করে পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে মিড-ডে মিল। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশু ও প্রসূতি মায়েদের খিচুড়ি নিতে দেখা যায়। ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপি, রাজ্য সরকারের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে তারা।
মানকর পল্লীমঙ্গল লাইব্রেরি সংলগ্ন ৬৯ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারটি ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয়। বর্তমানে এখানে ২৫ জন পড়ুয়া রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে আশপাশের জমি ভরাট করা হলেও আইসিডিএস সেন্টারটি নীচু অবস্থায় থেকে যায়, যার ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে জল জমে যায়। তার উপর, সেন্টারের ঠিক লাগোয়া একটি ড্রেন থাকায় বর্ষা হলেই নোংরা জল উপচে ভিতরে ঢুকে পড়ে। বৃহস্পতিবার অকাল বর্ষণ হয়, যার ফলে এই সেন্টারে এক হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যায়।
অভিযোগ, অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্যেও সেখানে চলে মিড-ডে মিল রান্নার কাজ। রান্নাঘরে জল ঢুকে পড়ায় উঁচু পাটাতনের উপর উনুন বসিয়ে কোনও রকমে খাবার তৈরি করা হয়। সেন্টারের শিক্ষিকা সুলেখা সাহা জানান,বৃষ্টি হলেই সমস্যা চরমে ওঠে। উঁচু উনুন করে রান্না করা হলেও, নোংরা জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। বাধ্য হয়ে ড্রামের উপর চালের বস্তা রাখা হয়েছে, যাতে খাবার নষ্ট না হয়। আমরা পঞ্চায়েত ও ব্লক সিডিপিওকে বিষয়টি জানিয়েছি।
ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। দুর্গাপুর-বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি রমন শর্মা বলেন,রাজ্যের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নও তলানিতে এসে ঠেকেছে। এনআরইজিএ প্রকল্পে কংক্রিটের রাস্তা ও ড্রেন তৈরি হলেও সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। পঞ্চায়েতের সদিচ্ছার অভাব এবং চরম উদাসীনতার কারণেই এমন নোংরা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র সরকার অর্থ বরাদ্দ করলেও, রাজ্য সরকার সেই টাকা উৎসব-মেলার পেছনে খরচ করছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে আমরা আন্দোলনে নামব। এই বিষয়ে গলসী-১ বিডিও জয়প্রকাশ মণ্ডল জানান,বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।