দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্বের কাগজ বলতে সঙ্গে মাত্র দু’টি ভুয়ো আধার কার্ড। অথচ সেই পরিচয়েই বছরের পর বছর কলকাতার গার্ডেনরিচ এলাকায় নিশ্চিন্তে বসবাস করে আসছিল এক বাংলাদেশি যুবক। অবশেষে সেনা ও কলকাতা পুলিশের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ল সে। ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে সন্দেহজনক আচরণ করে নজরে আসে এই যুবক। জেরায় উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম আজিম শেখ। তার বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলায়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে আজিম কলকাতায় ঢোকে। গার্ডেনরিচ এলাকার একটি আবাসনে আত্মীয়দের সঙ্গে থাকতে শুরু করে সে। তবে তার কাছে থাকা আধার কার্ড দেখে সন্দেহ হয় সেনা গোয়েন্দাদের।
সম্প্রতি ফোর্ট উইলিয়ামের প্রধান গেটের কাছে তাকে ঘোরাঘুরি ও উঁকিঝুঁকি মারতে দেখা যায়। কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত ওই এলাকায় একজন অপরিচিত যুবকের এমন আচরণ দেখে সতর্ক হন দায়িত্বে থাকা সেনাকর্মীরা। তাঁরা আজিমকে থামিয়ে পরিচয় জানতে চান। তখনই শুরু হয় সন্দেহের সূত্রপাত। প্রাথমিক জেরার পর আজিমের কাছ থেকে পাওয়া যায় দুটি আলাদা আধার কার্ড। দু’টিতেই ভিন্ন জন্মতারিখ। এছাড়া এক কার্ডে উল্লিখিত ‘মায়ের’ জন্মসাল দেখে চমকে ওঠেন গোয়েন্দারা। হিসেব অনুযায়ী, মা ও ছেলের বয়সের ফারাক মাত্র ৬ বছর! অর্থাৎ, সেই সম্পর্কও মিথ্যা। নাম, ঠিকানা ও সম্পর্ক—সবই গোঁজামিল। আধার কার্ড দু’টি যে ভুয়ো, তা ধরা পড়ে যাচাইয়ের পর।
সেনা গোয়েন্দারা সঙ্গে সঙ্গে আজিমকে পাকড়াও করে তুলে দেন হেস্টিংস থানার পুলিশের হাতে। পুলিশ ইতিমধ্যেই ভুয়ো পরিচয়পত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। তার সঙ্গে কারা জড়িত, কী উদ্দেশ্যে সে কলকাতায় প্রবেশ করেছিল, বিশেষ করে ফোর্ট উইলিয়ামের মতো স্পর্শকাতর এলাকার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছিল কেন—এসব নিয়ে চলছে গভীর তদন্ত। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, আজিম কোনও বড় অনুপ্রবেশ চক্রের সদস্য হতে পারে। তবে তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না, কিংবা সে কোনও গোপন নজরদারি বা উদ্দেশ্য নিয়ে শহরে ঘাঁটি গেড়েছিল কিনা—তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।