দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের ভেতরে অবস্থান অনেকটাই কোণঠাসা। কিন্তু মুখে তা কখনওই স্বীকার করেননি শশী থারুর। বরং নিজেকে কখনও ‘স্বতন্ত্র কণ্ঠ’ আবার কখনও ‘নৈতিক সমালোচক’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে এবার আর মোড় ঘোরাতে পারছেন না। কারণ, ইন্দিরা গান্ধীর ঘোষিত জরুরি অবস্থাকে নিশানা করে তিনি যেভাবে কলম ধরেছেন, তাতে কংগ্রেস-ঘনিষ্ঠ মহলের ধারণা—শশী থারুর বিজেপির সুরেই কথা বলছেন, তাও প্রকাশ্যে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংবাদমাধ্যম Project Syndicate-এ প্রকাশিত এক সম্পাদকীয় প্রবন্ধে, কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর সরাসরি ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর ভাষায়, জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা গান্ধীর স্বৈরাচারী মানসিকতা আমজনতার জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল। আজকের ভারত অন্তত ১৯৭৫-এর ভারতের মতো নয়।” কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্য, “ইন্দিরার সময় গণতন্ত্রের সব স্তম্ভকে মৌন করে রাখা হয়েছিল। বিচার বহির্ভূত হত্যা আকছার ঘটত।”
এখানেই প্রশ্ন উঠছে—এই শব্দচয়ন কি শুধুই ঐতিহাসিক পর্যালোচনা, না কি রাজনৈতিক বার্তা? কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে সম্প্রতি ‘জরুরি অবস্থাকে’ ভারতের গণতন্ত্রের কালো অধ্যায় বলে কটাক্ষ করেছেন, বিজেপি পালন করছে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’। সেই আবহেই শশীর এই সম্পাদকীয় প্রকাশ এবং তার শব্দভান্ডার—দুটি বিষয়ই অনেকটাই মোদি-বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে ফেলা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে মোদি সরকারের প্রশংসা করেছিলেন শশী থারুর। তখনও তাঁর বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন নেতারা—পবন খেরা, উদিত রাজ, জয়রাম রমেশের মতো নেতৃত্ব প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন। শশী সাফাই দিয়েছিলেন—‘‘আমি এই বিষয়ে বলেছি একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে, দলের অবস্থানের সঙ্গে মেলে না সেটা ঠিক, কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি দলবিরোধী।’’
শশী থারুরের মতো প্রভাবশালী ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত মুখ যখন দলের বিপরীতে সুর তোলেন, তখন তা নিছক ব্যক্তিগত মত নয়—তা হয়ে ওঠে রাজনৈতিক বার্তা। এবার সেই বার্তা কোন দিকে মোড় নেয়, তার দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।