দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার রেশ এখনও মুছে যায়নি। এমন এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। সব ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাক্ষাৎ হতে চলেছে তাঁর এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। সূত্রের খবর, দু'জন মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠকে থাকছে একাধিক রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও মানবিক ইস্যু।
এ বছরের ২২শে এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে বহু গ্রাম কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য থেকে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানো হয় কাশ্মীরে। রাজৌরি, পুঞ্চ-সহ বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা করেন ডেরেক ও ব্রায়েন, দোলা সেন, মানস ভুঁইঞা-সহ তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের দল। কেবল রাজনৈতিক বার্তা নয়, এই পদক্ষেপ কাশ্মীরবাসীর প্রতি সহানুভূতির নিদর্শন হিসেবেই দেখা হয়। ওমর আবদুল্লার এবারের কলকাতা সফর তাই নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়—এটি একটি কূটনৈতিক বার্তাও বটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সহানুভূতির জন্য ধন্যবাদ জানাতে পারেন, এবং কাশ্মীর-বঙ্গ সম্পর্কের রাজনৈতিক দিকটিও স্পষ্ট করে তুলতে পারেন।
বৈঠকের অন্যতম গুরুত্ব রয়েছে সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোটের অন্যতম মুখ এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষত নির্বাচনী আবহে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে দেশের সমস্ত আঞ্চলিক বিরোধী দলকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এর আগে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এবার যোগ দিচ্ছেন জম্মু-কাশ্মীরের অন্যতম আঞ্চলিক শক্তির মুখ ওমর আবদুল্লা। উল্লেখযোগ্যভাবে, কাশ্মীরে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে ওমর আবদুল্লা বরাবর সরব। এই বিষয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা।
কাশ্মীরের পর্যটকদের মধ্যে সবথেকে বেশি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। পর্যটককে চাঙ্গা করতে নবান্নের বৈঠকে সেই বিষয় আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তীব্র। পাশাপাশি রাজনৈতিক সাম্প্রতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে। ইতি মধ্যেই এনআরসি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছেন। বিভিন্ন বিরোধীদলকে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান করেছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন থান হাই। আনুষ্ঠানিকভাবে সৌজন্যে সাক্ষাৎ বলা হলেও পশ্চিমবঙ্গ এবং ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।