পাটনা, ১২ ফেব্রুয়ারি : আস্থাভোটে জয়লাভ করল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার। ১২৯ জন বিধায়ক প্রস্তাব সমর্থন করার পরে আস্থাভোটে জয়লাভ করেছে নীতীশ কুমার সরকার। আস্থাভোটে নীতীশের সরকারের জয়ের পরই বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধীরা। বিরোধী জোট ‘আইএনডিআই’ ছেড়ে দু’সপ্তাহ আগেই এনডিএ শিবিরে শামিল হয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সোমবার বিহার বিধানসভায় আস্থাভোটের সম্মুখীন হন তিনি। বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে অনায়াসেই এই শক্তিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কথা ছিল নীতীশের। আর তা করেও দেখালেন।
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন ১২২টি আসন। ১২৯ জন বিধায়ক প্রস্তাব সমর্থন করার পরে আস্থাভোটে জয়লাভ করেছে নীতীশ কুমার সরকার। সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর ভাষণ দেওয়ার পরেই স্পিকার তথা আরজেডি বিধায়ক আওয়াধ বিহারি চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। তবে ভোটাভুটির আগেই পদত্যাগ করেন স্পিকার। অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরেই পদত্যাগ করেছিলেন বিধানসভার স্পিকার। তবে বিরোধীদের দাবিতে ভোটাভুটি হয়। তাতে দেখা যায় ১২৫টি ভোট পড়েছে প্রস্তাবের পক্ষে। আর ১১২টি পড়েছে প্রস্তাবের বিপক্ষে।
বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে নীতীশের প্রতি আক্রমণ শানালেন তাঁরই প্রাক্তন ডেপুটি তেজস্বী যাদব। নীতীশের উদ্দেশে লালু-পুত্র বলেন, “বিহারের মানুষ জানতে চায়, আপনি কেন বার বার অবস্থান বদল করেন?” এর পাশাপাশি খানিক বিদ্রুপের সুরেই আরজেডি নেতা বলেন, “ন’বার শপথ (মুখ্যমন্ত্রী পদে) নিয়ে ইতিহাস গড়ার জন্য আমি নীতীশ কুমারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।” ভারতরত্ন নিয়ে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তেজস্বী বলেন, “আমি খুশি যে কর্পূরী ঠাকুর (ভারতরত্ন) পেয়েছেন।” তার পরই বিজেপিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “তারা ভারতরত্নকে একটি চুক্তি বানিয়ে ফেলেছে। চুক্তিটি হল যদি আমার সঙ্গে থাকো, তবে তোমায় ভারতরত্ন দেব।”
বিরোধী আরজেডি এবং কংগ্রেসকে তোপ দাগলেন আরজেডি এবং জেডিইউ নেতারা। নীতীশের দলের নেতা কেসি ত্যাগী বলেন, “কংগ্রেস তাদের বিধায়কদের হায়দরাবাদে পাঠিয়ে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেছিল। আর আরজেডি বিধায়কদের জেলবন্দি বানিয়েছিল।” প্রসঙ্গত, আরজেডি বিধায়কেরা অস্থায়ী শিবির করে গত কয়েক দিন ধরেই তেজস্বীর সরকারি বাসভবনে ছিলেন। বিরোধী জোটের সমালোচনায় সরব হন বিহারের দুই উপমুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির বিজয় সিন্হা এবং সম্রাট চৌধুরী। তাঁরা জানান, এনডিএ শাসনে বিহারকে তারা সন্ত্রাস এবং দুর্নীতিমুক্ত করবেন।
এদিন বক্তব্য রাখার সময় নীতীশ কুমার বলেছেন, লালুপ্রসাদ যাদব এবং রাবড়ী দেবীর ১৫ বছরের শাসনে বিহারে সবচেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। বিরোধী জোটকে ঐক্যবদ্ধ করতে চাইলেও তিনি সফল হননি। বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে এমনই দাবি করলেন নীতীশ কুমার। নীতীশ বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য আমরা কাজ করেছি।