Technology

1 year ago

Ritu Karidhal :তৃতীয় চন্দ্রযান উৎক্ষেপণে ভারতের ‘রকেট-মানবী’, কে এই ঋতু কারিধাল?

Ritu Karidhal
Ritu Karidhal

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩। শুক্রবার ঠিক দুপুর ২টো  ৩৫ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে তা উৎক্ষেপণ করা হয়। এই অভিযান সফল হলে, আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পর ভারতই হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যাদের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের বুকে নামবে। এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন ঋতু কারিধাল শ্রীবাস্তব।


এক প্রতিবেদনে , ঋতুকে বলা হয় ভারতের ‘রকেট-মানবী’। ইসরোর বিজ্ঞানী ঋতুর মুকুটে এর আগেও অনেক পালক জুড়েছে। মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ঋতু। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর তিনিই। ঋতুর জন্ম লখনউতে। এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন ঋতু। মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা, কাজের ইচ্ছাও তার ছোট থেকেই।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক ছোট থেকেই মহাকাশ নিয়ে দারুণ আগ্রহ ছিল ঋতুর। ইসরো বা আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার গবেষণার বিষয়ে যত খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হত, তা কেটে নিজের কাছে রেখে দিতেন ঋতু।

১৯৯৬ সালে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলেন ঋতু। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, দারুণ ভাল পড়ুয়া ছিলেন তিনি। এছাড়া বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস (আইআইএসসি) এর থেকে এমটেক পাশ করেছেন ঋতু।

উওমেন ইকনমিক ফোরাম জানিয়েছে, ১৯৯৭ সালে ইসরোতে যোগ দেন ঋতু। তার পর থেকে ইসরোর বহু অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। বেশ কয়েকটি প্রজেক্টের মাথাতেও ছিলেন তিনি। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রায় ২০টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ঋতুর। ‘ইসরো তরুণ বিজ্ঞানী’ সম্মান পেয়েছিলেন ঋতু। সেই সম্মান তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম।


২০১৫ সালে ‘ইসরো টিম অ্যাওয়ার্ড ফর এমওএম (মার্স অরবিটার মিশন)’ পেয়েছিলেন ঋতু। মঙ্গলযান অভিযানে শামিল হওয়ার জন্য। ‘এএসআই টিম অ্যাওয়ার্ড’, ‘ওমেন অ্যাচিভার্স ইন এয়ারোস্পেস, ২০১৭’- সম্মান পেয়েছিলেন তিনি।

এবার চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর তিনিই। ৪০ দিন পর, আগামী ২৩ থেকে ২৪ অগস্টের মধ্যে চাঁদের বুকে নামতে পারে চন্দ্রযান। ইসরোর এই চন্দ্রযানের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। যা চন্দ্রযানটিকে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ঠেলে দেবে। এলভিএম-৩ হল একটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান।


এর আগে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ এবং চন্দ্রযাত্রায় এই এলভিএম-৩ ব্যবহৃত হয়েছে। একে ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ বলা হয়। এর মধ্যে দু’টি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি। তা ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটি চালনা করে। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’ এবং রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-কে চাঁদের পিঠে নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরো-র চন্দ্রযান-২। অতীতের অভিযানে পাঠানো অরবিটারটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। এবারের অভিযানে ইসরো আর কোনও অরবিটার পাঠায়নি চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারেরই সাহায্য নেবে চন্দ্রযান-৩-এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার। চাঁদের মাটিতে নামার পর দু’সপ্তাহ ধরে চলবে গবেষণা। এতে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং নাসার সাহায্য নেওয়া হবে।

You might also like!