দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে আপনি কতটা দক্ষ? ব্যক্তিগত হোক বা পেশাদার জীবন—তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত অনেক সময় দরকারি হয়ে পড়ে। কিন্তু ভাবনা-চিন্তা না করে নেওয়া সেই সিদ্ধান্ত যদি ভুল হয়, তার ফলাফল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, ভাবেন কি?
‘নেমাওয়াশি’ হল এমন পন্থা, যা ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে ব্যক্তিবিশেষকে আটকাতে পারে। জাপানি এই দর্শন বলে, ব়ড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে হঠকারিতা নয়, বরং সুচিন্তিত ভাবনা থাকা দরকার। কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে সঠিক সমীক্ষা, তথ্য সংগ্রহ সাফল্য নিশ্চিত করে।
‘নেমাওয়াশি’-র নেপথ্য ভাবনা কী?
জাপানি পন্থা ‘নেমাওয়াশি’-র নেপথ্যে রয়েছে বাগান করা। একটি চারা টবে পুঁততে হলে প্রস্তুতি লাগে। সঠিক টব, মাটি চয়ন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই শিকড়-সহ অত্যন্ত সন্তর্পণে তা পুঁততে হয়। শিকড় ছিঁড়ে গেলে সেই গাছ কিন্তু বেড়ে উঠবে না। ঠিক তেমনই কর্মক্ষেত্রেও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রস্তুতির দরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা, প্রয়োজনে সমীক্ষা, তথ্য সংগ্রহ করা, তার ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। দলগত আলোচনার মাধ্যমেও নতুন কোনও প্রকল্প বা বিনিয়োগ সম্পর্কে ইতিবাচ বা নেতিবাচক দিকটি উঠে আসতে পারে। ছোট ছোট পদক্ষেপগুলি কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
কেন সাফল্যের কারণ হতে পারে ‘নেমাওয়াশি’?
বাড়ি হোক বা অফিস, দৈনন্দিন কাজে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন যে কেউ। যে পন্থায় কাজ চলছে সেটার বদল চট করে মেনে নিতে পারেন না কেউ। বা বদল হলেও শুরুতে তা সমস্যার মনে হয়। কিন্তু ‘নেমাওয়াশি’ কর্মজগতে উন্নয়নের প্রয়োজনে ছোট ছোট বদল এবং নতুন ধারণাতে উৎসাহ দেয়।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, নীতি নির্ধারক এবং কর্মীদের আলোচনাতে উৎসাহ দেয় ‘নেমাওয়াশি’। তার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে মনোমালিন্যের পরিসর কমে।
কোনও প্রজেক্ট বাস্তবায়নের আগে বার বার আলোচনা, তথ্য সংগ্রহ করে তার বিচার বিশ্লেষণ, ব্যর্থতা বা ঝুঁকির আশঙ্কা কমায়।
দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলে পরিকল্পিত ভাবনা কোনও প্রকল্পকে সফল করতে সাহায্য করে। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সফল ধাপ হয়ে ওঠে ‘নেমাওয়াশি’।
কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ
· কোনও একটি প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে কাদের সঙ্গে কথা বললে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ, স্টেকহোল্ডারদের খুঁজে বার করা দরকার।
· আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রস্তাব আনার আগে প্রকল্পের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়ে অফিসে কর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলে সুবিধা হতে পারে।
· যে কোনও প্রকল্প সফল করতে হলে প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধান করে তার বিশ্লেষণ জরুরি।
· চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে বিশদ জানা প্রয়োজন। কোনও কারণে আশানুরূপ ফল না মিললে, কী ভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে, ভেবে নেওয়া দরকার।