Life Style News

4 hours ago

Dust Allergy: ঘরের অদৃশ্য শত্রু,ডাস্ট অ্যালার্জি বাড়াচ্ছে শ্বাসকষ্ট, হাঁচি–সর্দি—সতর্কতায় মিলবে মুক্তি

Dust Allergy
Dust Allergy

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: আপনার ঘর কি সত্যিই আপনার নিরাপদ আশ্রয়? নাকি অদৃশ্য ধুলোর সাম্রাজ্যে ভর করে সেখানে বাস করছে নানা অ্যালার্জির কারণ? বিশেষজ্ঞদের মতে, ডাস্ট অ্যালার্জি এখন শহুরে জীবনে অন্যতম সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা। হাঁচি, সর্দি, চোখ চুলকানো, বারবার নাক বন্ধ হওয়া কিংবা শ্বাসকষ্ট—এসবই হতে পারে ঘরের মধ্যেই থাকা ধুলোকণার ফল।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ডাস্ট অ্যালার্জির প্রধান উৎস হলো ধুলোর মাইট। এই অতি ক্ষুদ্র জীবাণুগুলি সাধারণত গরম এবং আর্দ্র পরিবেশে দ্রুত বেড়ে ওঠে। বিশেষত বিছানাপত্র, বালিশ, গদির ভাঁজ, কার্পেট বা পুরনো পর্দা—এসবই তাদের আদর্শ বাসস্থান। এ কারণে ঘর পরিষ্কার রাখাই হয়ে উঠছে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষাব্যবস্থা।


কীভাবে মিলবে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি? 


১. বিছানাপত্রের বিশেষ যত্ন: কভার ব্যবহার করতে হবে। বালিশ, তোষক এবং লেপের উপর অ্যালার্জি-প্রুফ কভার ব্যবহার করুন। এই কভারগুলি মাইট এবং তাদের বর্জ্য পদার্থকে আটকে রাখে। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানার চাদর, বালিশের কভার এবং কম্বল গরম জলে ধুয়ে নিন।

২. ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ: ধুলোর মাইট আর্দ্রতা ভালবাসে। আপনার ঘরের আর্দ্রতা ৫০% এর নিচে রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে একটি Dehumidifier (আর্দ্রতা শোষণকারী যন্ত্র) ব্যবহার করতে পারেন।

৩. কার্পেট এবং ভারী পর্দা এড়িয়ে চলুন: কার্পেট, ভারী কম্বল বা ঘন পর্দা ধুলোর মাইট এবং অন্যান্য অ্যালার্জেনদের জন্য আদর্শ আবাস। সম্ভব হলে কার্পেট সরিয়ে শক্ত কাঠ, টাইলস বা লিনোলিয়ামের মেঝে ব্যবহার করুন। জানলায় সহজে ধোওয়া যায় এমন হালকা ব্লাইন্ড বা পর্দা ব্যবহার করুন।

পরিচ্ছন্নতার স্মার্ট রুটিন- নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা জরুরি, কিন্তু সেই পরিচ্ছন্নতা হতে হবে সঠিক উপায়ে।

১. সঠিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার: সাধারণ ঝাড়ু ব্যবহার করলে ধুলো আরও বেশি বাতাসে ছড়ায়। এর পরিবর্তে HEPA (High-Efficiency Particulate Air) ফিল্টার যুক্ত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। এটি সূক্ষ্ম ধূলিকণাকে শোষণ করে, যা অ্যালার্জির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

২. ভেজা কাপড় ব্যবহার: আসবাবপত্র এবং অন্যান্য জিনিস মোছার জন্য শুকনো কাপড়ের পরিবর্তে ভেজা কাপড় বা মপ ব্যবহার করুন। এতে ধুলো বাতাসে ওড়ার সুযোগ পায় না।

৩. মাস্ক পরুন: যখন ঘর পরিষ্কার করবেন বা ভ্যাকুয়াম করবেন, তখন নাকে এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন, যাতে অ্যালার্জেন সরাসরি আপনার শ্বাসনালীতে প্রবেশ না করতে পারে। পরিষ্কারের পর কমপক্ষে ২০ মিনিট ঘর থেকে দূরে থাকুন।

৪. বিশুদ্ধ বাতাসের দিকে নজর: বাড়ির ইনডোর বাতাসের গুণমান উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরে একটি HEPA ফিল্টার যুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। যা বাতাস থেকে পরাগ, ধুলোর মাইটের বর্জ্য এবং অন্যান্য অ্যালার্জেন ফিল্টার করে দেবে। এ ছাড়া ঘরের ভেতরের ডাস্টবিন নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং বাইরে রাখুন।

ডাক্তারের পরামর্শ কখন নেবেন?

যদি কেউ লক্ষ্য করেন যে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার সত্ত্বেও অ্যালার্জির উপসর্গগুলি মারাত্মক আকার ধারণ করছে, তা হলে একজন অ্যালার্জিস্ট বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। তাঁরা সঠিক পরীক্ষা করে প্রয়োজনমতো অ্যান্টিহিস্টামিন, নেজাল স্প্রে বা অ্যালার্জি শট (Immunotherapy) এর মতো চিকিৎসা শুরু করতে পারেন। মনে রাখবেন, ডাস্ট অ্যালার্জি জীবনের একটি অংশ হতে পারে। কিন্তু আপনার জীবনযাত্রার নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। সামান্য সচেতনতা এবং কিছু স্মার্ট পরিবর্তন আপনাকে দেবে একটি স্বচ্ছন্দ, হাঁচি-মুক্ত জীবন।

You might also like!