
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই রান্নাঘরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটাই। প্রতিদিন একই জায়গায় কাজ করতে করতে অনেকে নিজের হেঁশেলের ছোটখাটো খুঁত আর লক্ষ্যই করেন না। ফলে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা কিংবা সাজানোর প্রয়োজনীয়তা চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু অতিথিরা কিন্তু এই ভুলগুলি ধরতে খুব একটা সময় নেন না। বিশেষ করে বাড়িতে কোনো খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানে এলে তাঁদের নজর প্রথমেই ঘুরে যায় রান্নাঘরের দিকে।
বাড়ির রান্নাঘরই অতিথিদের কাছে গৃহস্থের পরিচ্ছন্নতা ও রুচির প্রথম পরিচয়। তাই আগে থেকে নজর থাকলে অস্বস্তিতে পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে। দেখে নিন রান্নাঘরের কোন কোন অংশে অতিথিদের চোখ আগে যায়—
১. রান্নাঘরের গন্ধ: সদ্য রান্না করা পদের গন্ধে খিদে চাগাড় দিয়ে ওঠে বটে। কিন্তু আগের দিনের পেঁয়াজ-রসুনের গন্ধ, সিঙ্কের এঁটো বাসন, ফ্রিজের গুমোট ভাব অতিথিকে বিব্রত করে। আপনি হয়তো অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন বলে খেয়াল করেন না। কিন্তু অতিথিদের খারাপ ধারণা হতে পারে। তাই রান্না করার পরই জানলা খুলে দিন, লেবুর জল ফুটিয়ে নিন, আর ফ্রিজে রাখুন বেকিং সোডা। এই টোটকাগুলিতে দুর্গন্ধ উধাও হয়ে যেতে পারে।
২. সিঙ্ক এবং তার চারপাশ: অনেকেই ভাবেন, এঁটো বাসন রাখা হয় মানেই এলাকাটি নোংরা। কিন্তু ভাবনায় ছোট্ট পরিবর্তন আনা উচিত। এঁটো বাসন রাখা হয় না, সিঙ্কে বাসন পরিষ্কার করা হয়। ফলে সে জায়গাটির স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সবচেয়ে বেশি জরুরি। সিঙ্কে জমে থাকা থালা, ভেজা স্পঞ্জ, ছড়ানো বাসনপত্র, এ সবই অতিথিদের নজরে পড়ে দ্রুত। রান্নাঘর যতই সুন্দর হোক, সিঙ্ক নোংরা থাকলে গোটা জায়গার আবহেই খারাপ প্রভাব পড়ে। অতিথিদের ঘৃণাও তৈরি হতে পারে ময়লা দেখে। তাই অতিথি আসার আগে বাসন ধুয়ে, সিঙ্ক পরিষ্কার করে, স্পঞ্জ নিংড়ে শুকিয়ে রাখুন।
৩. কাউন্টারটপের সজ্জা: হাতের কাছে সব জিনিস রেখে দেওয়ার প্রবণতা থাকলে, সবচেয়ে বেশি অত্যাচার চলে কাউন্টারটপের উপর। কাউন্টারটপে খুব বেশি বোতল, কাপ, কৌটো, যন্ত্রপাতি রাখলে রান্নাঘর অগোছালো দেখায়। অতিথিরা ভাবেন, জায়গাটি ছোট। কিন্তু আসলে ভুল রয়ে গিয়েছে জায়গায় ব্যবহারে। তাই কাউন্টারটপে শুধু অতি প্রয়োজনীয় দু’একটি জিনিসই রাখুন। বাকিগুলির জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ করে রাখুন।
৪. আলো: বদ্ধ, কম আলো-হাওয়া খেলে, এমন রান্নাঘরে প্রাণবন্ত ভাব কম। আবার যদি খুব বেশি উজ্জ্বল হয়, তা হলেও চোখে লাগে। তাই স্নিগ্ধ, উষ্ণ আলো দিয়ে সাজালে রান্নাঘর খুব সহজেই অতিথিবান্ধব হয়ে ওঠে। ক্যাবিনেটের নীচে লাইটের স্ট্রিপ লাগিয়ে দিলে বা খাওয়ার টেবিলে সুন্দর আলো ঝুলিয়ে দিলে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে জায়গাটি।
৫. বসার বন্দোবস্ত: অতিথি আপ্যায়নে রকমারি খাবার রান্না করছেন। রাঁধতে রাঁধতে গল্পও করছেন। এ দিকে বসার জন্য যথেষ্ট জায়গা নেই। ফলে রান্নাঘরে গিয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না অতিথিরা। দামি, রাজকীয় ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই, কিন্তু টেকসই, সুন্দর, আরামদায়ক চেয়ার বা টুল রাখলে রান্নাঘরের আবহ পাল্টে যেতে পারে।
গৃহস্থের চোখ সয়ে গেলেও অতিথির চোখ কখনও সয় না—এই কথা আজও প্রযোজ্য। তাই আগেভাগে সামান্য যত্ন নিলেই আপনার রান্নাঘর হয়ে উঠবে আরও আকর্ষণীয় ও পরিচ্ছন্ন, আর আপনিও বিব্রত হওয়া থেকে বাঁচবেন।
