দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :উত্তর ২৪ পরগনায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ছুঁল এক নতুন মাইলফলক। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই জনকল্যাণমূলক উদ্যোগে গত অর্থবর্ষেই দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ পেয়েছেন বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা। তাঁদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫১ কোটি টাকা। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, জেলার মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প কতটা উপকারী হয়ে উঠেছে।
ক্ষমতায় এসে রাজ্যের মানুষের স্বার্থে একাধিক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ও উল্লেখযোগ্য হল ‘স্বাস্থ্যসাথী’। এই প্রকল্পের বিশেষত্ব, প্রত্যেক পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলা সদস্যের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়— একেবারে অভিনব এক দৃষ্টান্ত। এই কার্ডের মাধ্যমে রাজ্যবাসী বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যয়ে আর্থিক সহায়তা পান, যা সরাসরি রাজ্য সরকার বহন করে। ফলে বহু দুঃস্থ ও অসহায় মানুষ আজ বেসরকারি নার্সিংহোমেও চিকিৎসার সাহস পাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে রাজ্য, জেলা এবং দেশের বিভিন্ন অনুমোদিত হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সম্ভব— হোক তা স্নায়ুবিক সমস্যা, স্ত্রীরোগ, জটিল অস্ত্রোপচার কিংবা বহু ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসা। রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগের দিন থেকে ছাড়ার পর পাঁচ দিন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরিষেবা এই প্যাকেজের অন্তর্গত। এমনকি হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় রোগীর যাতায়াত খরচও দেয় সরকার। সব মিলিয়ে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প হয়ে উঠেছে বাংলার মানুষের চিকিৎসার এক নির্ভরযোগ্য আশ্রয়।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চিকিৎসাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এই জেলায় কার্ডধারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ, যার মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ ৩ হাজার রোগী ইতিমধ্যেই বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার ব্যয় করেছে প্রায় ২৫১ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, মার্চের পর এপ্রিল ও মে মাসেও কয়েক কোটি টাকার চিকিৎসা হয়েছে এই প্রকল্পের আওতায়।
নতুন করে প্রায় ১৮ হাজার বাসিন্দা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এ বছরে। জেলার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন, “উত্তর ২৪ পরগনায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে অনেক মানুষ সুফল পাচ্ছেন। আমরা জেলার তরফে প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখি। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প পরিচালনার জন্য জেলার নিজস্ব বিশেষ টিমও রয়েছে।”