ধলাই : ত্রিপুরা বিধানসভার ধনপুর ও বক্সনগর এই দুটি বিধানসভার উপনির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষে একজন প্রার্থীর লড়াইয়ের রণকৌশল খাটলো না । মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের নির্ঘণ্ট পেরিয়ে যাবার পর দুই কেন্দ্রেই বিজেপির বিরুদ্ধে তিন জন করে প্রার্থী রইলেন ময়দানে ।
২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে ধনপুর ও বক্সনগর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন যথাক্রমে বিজেপি ও সিপিআইএম প্রার্থীরা । পরবর্তীতে বিজেপির বিজয়ী প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক পদত্যাগ করেন । আর বক্সনগর কেন্দ্রে সিপিআইএমের বিজয়ী প্রার্থী সামশুল হকের আকস্মিক মৃত্যু হয় । ফলে এই দুই উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে ৫ সেপ্টেম্বর । আর তিনদিন পর ৮ সেপ্টেম্বর ভোট গণনা। এই উপনির্বাচনকে বিরোধী শিবির বিশেষ করে সিপিআইএম ও কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের বার্তা দেওয়ার সুযোগ প্রচার এনে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীর তত্ত্ব হাজির করে । তাদের দাবি ছিল, বিজেপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একজন করে প্রার্থী দেওয়া হলে সম্মিলিত বিরোধী ভোটের কাছে হার মানবে বিজেপি । এর ফলে বিধানসভায় এবং গোটা রাজ্যেই সাংগঠনিক ভাবেও জোর ধাক্কা খাবে দল । আর এর প্রভাব সরাসরি পরবে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে । সেই মর্মে সবার আগে প্রার্থী ঘোষণা করে বামফ্রন্ট । কংগ্রেস জানায় বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে তারা এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাবে না । উল্টো এতদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী বামফ্রন্ট প্রার্থীদের সমর্থন করবে দল । বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস তীপ্রা মথাকেও ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের আহ্বান জানায় । কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই বাম প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারও চলছে । যথারীতি প্রার্থী ঘোষণা করে বিজেপিও । জোরদার প্রচারের সঙ্গে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কৌশলগত ভূমিকা ঠিক করাও চলছে । আর দুই কেন্দ্রেই ময়দানে রয়েছেন দুইজন করে নির্দল প্রার্থী । সোমবার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় দুই কেন্দ্রেই চারজন করে প্রার্থীর মধ্যে চতুর্মুখী লড়াই নিশ্চিত হল । একে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশলের জয়লাভ বলেও বলছেন অনেকে ।
এই দুই আসনের ফলাফল বিরোধীদের পক্ষে গেলেও ক্ষমতা বদলের সম্ভাবনা নেই । কারণ বিভানসভায় এখন সরকার পক্ষে রয়েছেন ৩২ জন আর বিরোধী পক্ষে রয়েছেন ২৬ জন বিধায়ক। ফলে এই ফলাফলে বিরুদ্ধে গেলে সরকার যেমন ক্ষমতা হারাবে না তেমনি দুটো আসন পেলে বিরোধীরাও ক্ষমতার জন্য প্রয়োজনীয় ৩১ সংখ্যায় পৌঁছুতে পারবেন না । মাঝপথে বিরোধী ঐক্যের জিগির যে আসলে রাজনৈতিক চমক ছিল সেটাই প্রমাণ হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল ।