দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হলিউডের ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ সিনেমাটি মনে আছে? ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলির অনবদ্য অভিনয়ে ভরা সেই ছবি নিয়ে এক সময় তুমুল আলোচনা হয়েছিল। এই সিনেমা আমাদের দেখিয়েছিল, কীভাবে দাম্পত্যের কলহ, রাগ আর অভিমান কখনও কখনও পরিণত হয় গভীর ভালোবাসা ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতায়। তীব্র আক্রোশ আর দ্বন্দ্বের পরও কীভাবে দু’জন মানুষ একে অপরের প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়ে—এই সমীকরণ শুধুই কি রূপালি পর্দার কল্পনা? না, একেবারেই নয়। মনোবিজ্ঞানের বেশ কিছু গবেষণা প্রমাণ করছে, বাস্তবেও প্রেম কিংবা দাম্পত্য সম্পর্কে ঝগড়ার পর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মনোমালিন্য বা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরে দম্পতি কিংবা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে তৈরি হয় আরও গভীর শারীরিক ও মানসিক টান। এই প্রবণতার পিছনে রয়েছে মনস্তাত্ত্বিক কিছু নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা। কিন্তু ঠিক কী সেই কারণ? কেন ঝগড়ার পর শারীরিক নৈকট্যের টান অনুভব করেন অনেকেই? উত্তরের খোঁজ মিলছে মনোবিজ্ঞানেই।
বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে, ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ালে শরীরে টেস্টোস্টেরন, অ্যাড্রিনালিন, কর্টিসলের মতো হরমনের ক্ষরণ বাড়ে। এই প্রতিটি হরমোন উত্তেনা এবং মানসিক চাপ বাড়িয়ে তোলে। আর যৌনসম্পর্কের সময় বাড়ে সেরাটোনিন, ডোপামিনের মতো মন ভালো রাখার হরমোনের ক্ষরণ। এ বার টেস্টোস্টেরন, কর্টিসলের মতো হরমোনগুলি শরীরকে সেরোটোনির, ডোপামিনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। যে কারণে শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছা বাড়ে অনেকের ক্ষেত্রেই।
মনোবিদেরা বলেন, ঝগড়ার সময় শরীরে কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। সেই হরমোনগুলি শারীরিক এনার্জি খানিকটা বাড়িয়ে দেয়। সেই শক্তিই শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছা, আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। দু'জনেরই এনার্জির মাত্রা যদি চূড়ান্ত হারে বেড়ে যায়, তা হলে ঝগড়া থেকে সুস্থ যৌন সম্পর্ক হতে পারে। ঝগড়ার শেষে পরস্পরের কাছে দুঃখপ্রকাশের কাছে একটা পর্ব থাকে। কিন্তু অনেকেই দুঃখপ্রকাশ বা ক্ষমা চাওয়াটা মুখে ব্যক্ত করতে পারেন না। আর সেখানেই মুখর হয়ে ওঠে শরীরী ভাষা। তা ছাড়া ঝগড়া চলাকালীন অনেক সময় এমন কিছু কথা একে-অন্যকে বলা হয়, যাতে গাঢ় অভিমান জমে মনে। সেই অভিমান থেকেও কাছাকাছি আসার তাগিদ তৈরি হয়।