কলকাতা, ৩ ফেব্রুয়ারি : রমরম করে চলছে কলকাতা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয় বার্ষিক চিত্র প্রদর্শনী। এসপ্লানেডে এই প্রদর্শনী দেখতে আসছেন নানা পেশার, নানা বয়সের মানুষ। ‘চিত্র যেথা ভয়শূন্য …’ নামে ওই প্রদর্শনীতে আছে নানা বিষয়ের সংবাদ-চিত্র। সারা বছর তাঁরা ঘোরেন খবরের সন্ধানে। কাঁধে ক্যামেরার ব্যাগ নিয়ে ছুটে বেড়ান দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। সারা বছর তাঁদের চোখ থাকে ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে। তাঁদেরই তোলা ছবি, পাঠকদের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে, আজ তাঁরা যেন পাঠকদের মুখোমুখি।
টি এন সেসনের নির্দেশে সারা দেশে যখন সচিত্র ভোটার কার্ড তৈরীর প্রস্ততি চলছিল, নিয়ম মেনে আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও এসেছিলেন ভোটার কার্ডের ছবি তোলাতে। কনজাঙ্গটিভাইটিস হওয়ায় তাঁর চোখে ছিল কালো চশমা। অভিজ্ঞ আলোকচিত্রী দেবাশিস রায়ের তোলা সেই ছবি যেমন আছে প্রদর্শনীতে, তেমনই আছে ১৯৯০-এর ১৬ আগস্ট হাজরার মোড়ে শুভঙ্কর চক্রবর্তীর তোলা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আক্রান্ত হওয়ার ছবি। এই প্রতিবেদকের সামনে সেই ছবি তুলতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে আক্রান্ত হন শুভঙ্কর নিজেও।
বিকাশ দাস, অমিত ধর-সহ সুপরিচিত কিছু অভিজ্ঞ সংবাদ আলোকচিত্রীর ভাবনার ফসল এই প্রদর্শনী। নিউজ ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে ফিচার ফটোগ্রাফি, খেলা-বিনোদন সব ধরনের ছবি তুলে ধরা হয়েছে এতে। অংশগ্রহণকারী চিত্র সাংবাদিকদের থেকে দু’টি করে ছবি প্রদর্শনীর জন্য নেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় বছর স্বল্প পরিসরে এই আয়োজন করা হলেও, আগামী দিনে আরও ব্যাপক আকারে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করতে ইচ্ছুক উদ্যোক্তারা।
পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে আছে শুভঙ্কর দাস (মনোক্রোম), শীর্ষেন্দু গায়েন (নেচার), বিশ্বনাথ বাগ (কালার) প্রমুখের ছবি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ডেকার্স লেনের পাশে, চলবে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক সৃঞ্জয় বসু উদ্বোধন করেন। এসেছিলেন প্রাক্তন সাংসদ-সাংবাদিক কুণাল ঘোষ, বাম নেতা রবীন দেব-সহ বেশ কিছু বিশিষ্টজন।
উদ্যোক্তা-আলোকচিত্রী দেবাশিস রায় জানিয়েছেন, “এই পেশায় কিন্তু বিপদ, ঝুঁকি আছে। তা গায়ে না মেখেই কাজ করি। তাই আমাদের থিম ‘চিত্র যেথা ভয়শূন্য’। চারদিনের এই প্রদর্শনীতে কলকাতার প্রেস ফটোগ্রাফারদের তোলা প্রায় ২৪০টি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। বেশির ভাগই প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রকাশিত।” উদ্যোক্তারা জানান, দর্শনার্থীদের আনন্দ দেখে মুগ্ধ আমরা সকলেই। কাজের প্রতি আরও দায়িত্ববোধ বেড়ে গেল।
দেবাশিস জানান, সরস্বতী পুজোর দিন সকাল সকাল স্নান সেরে পরিষ্কার জামাকাপড় পরে এক দৌড়ে চলে এসেছিলেন সিধো কানহু ডহরের ৬ এসপ্লানেড ইস্টে আয়োজিত কলকাতা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রদর্শনী ও মন্ডপে। প্রথমে সেখানে সামনে এসে বেশ কিছুক্ষণ অবাক হয়ে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকেন। সরস্বতী প্রতিমায় প্রণাম ঠুকে এক দৌড়ে প্রসাদ বিতরণের জায়গায়।