
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সামগ্রিক সুস্থতার জন্য মুখগহ্বরের পরিচর্যা কতটা জরুরি, সে বিষয়ে চিকিৎসকেরা বারবার সতর্ক করে আসছেন। নিয়মিত দাঁত মাজা, ফ্লসিং এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার—এই মৌলিক অভ্যাসগুলো বজায় না রাখলেই সমস্যার সূত্রপাত। খাবারের অবশিষ্টাংশ, খনিজ লবণ ও ব্যাকটেরিয়া ধীরে ধীরে দাঁতের ওপর জমে তৈরি করে প্ল্যাক। আর সেই প্ল্যাকই পরবর্তীতে শক্ত হয়ে তৈরি হয় টারটার।
দন্ত্য বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, দাঁতের গায়ে জমে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস খনিজের সংমিশ্রণে যে হলুদ বা বাদামি রঙের শক্ত আবরণ তৈরি হয়, তাকেই টারটার বা ক্যালকুলাস বলা হয়। সাধারণ ব্রাশিং দিয়ে এই স্তর অপসারণ সম্ভব নয়। বরং সময়ের সঙ্গে টারটার দাঁতের ইনার এনামেল ক্ষয় করতে শুরু করে, বাড়িয়ে দেয় ক্যাভিটি, মাড়ির প্রদাহ ও দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, টারটারের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে স্কেলিং বা পেশাদারি পরিষ্কার করানো প্রয়োজন। পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় টারটারের আস্তরণ আলগা করতে সাহায্য করতে পারে, তবে সেগুলো চিকিৎসার বিকল্প নয়। বরং নিয়মিত যত্নই পারে টারটার গঠনের প্রবণতা কমাতে।
৫টি ঘরোয়া টোটকায় দাঁত থেকে প্ল্যাক বা টারটার দূর করুন—
বেকিং সোডা: এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা, অল্প টুথপেস্ট, স্বল্প পরিমাণ নুন মিশিয়ে টুথব্রাশ‑এ লাগিয়ে দাঁত মেজে নিন। কেউ কেউ শুধু বেকিং সোডা আর নুনও ব্যবহার করতে পারেন। এর পর ইষদুষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই পদ্ধতিতে দাঁত পরিষ্কার করলে দাগ আলগা হয়ে যেতে পারে।
পেয়ারা: গোটা ফল অথবা কেবল পেয়ারার পাতা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা যেতে পারে। দাঁতের উপর প্ল্যাক জমে থাকার সমস্যাও কমাতেও সাহায্য করবে। দিনে ১-২ বার পরিষ্কার পেয়ারা পাতা ভাল করে চিবিয়ে মুখ থেকে ফেলে দিন। অথবা ডাঁসা পেয়ারায় সামান্য নুন ছড়িয়ে চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সাদা ভিনিগার: এতে থাকে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণাগুণ। দাঁতে জমে থাকা প্ল্যাক বা টারটার দূর করতে কার্যকরী হতে পারে সাদা ভিনিগার। অর্ধেক কাপ জলে দুই চা চামচ সাদা ভিনিগার আর সামান্য নুন মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। দিনে দু’বার মাউথওয়াশ হিসেবে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে টারটার ও প্ল্যাক গঠনে বাধা পড়বে।
কমলালেবুর খোসা: টাটকা কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তা দিয়ে দাঁত ঘষে নিতে পারেন। ২–৩ মিনিট রেখে তার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২–৩ বার এই টোটকা প্রয়োগ করতে পারেন। কেউ কেউ আবার খোসা বেটে মিশ্রণ বানিয়ে তা দিয়ে ব্রাশ করার পক্ষপাতী।
অ্যালো ভেরা: অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে দাঁতে ঘষে নিতে পারেন। এক চা চামচ অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে ৪ চা চামচ গ্লিসারিন, ৫ টেবিল চামচ বেকিং সোডা, অল্প এসেনশিয়াল অয়েল আর এক কাপ জল মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস তৈরি করুন। যত দিন না প্ল্যাক ও টারটার দূর হচ্ছে, নিয়মিত এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। তার পর থেকে সপ্তাহে ৩-৪ বার এই নিয়মে দাঁত পরিষ্কার করতে পারেন।
