দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ হিন্দুধর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন এই অক্ষয় তৃতীয়া। কিন্তু কেন এই দিনটি এত তাৎপর্যপূর্ণ, তা নিয়ে রয়েছে নানা ধরনের মতামত। অনেকেই মনে করেন, একটি নয়, অনেকগুলি ঘটনা ঘটেছে এই দিনে। আর সেই কারণেই এই দিনটি এত গুরুত্বপূর্ণ। দেখে নেওয়া যাক, কী কী কাহিনি রয়েছে এর পিছনে।
অনেকেই মনে করেন, এই দিনেই ত্রেতা যুগ শেষ ও দ্বাপর যুগ শুরু হয়েছিল। একটি যুগের সমাপ্তির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত।
কথিত আছে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই মহর্ষি বেদব্যাসের থেকে মহাভারতের কাহিনি শুনেতা লিখতে বসেন গণেশ। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে গণেশের পুজোও করা হয়। তবে তার সঙ্গে মহাভারত রচনার যোগ নেই।
অক্ষয় তৃতীয়াকে অনেকে পরশুরাম জয়ন্তীও বলেন। মনে করা হয়, এই দিন জন্মেছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। ঋষি জমদগ্নি ও মাতা রেণুকার পুত্র পরশুরাম ব্রাহ্মণ হলেও আচার আচরণে ছিলেন ক্ষত্রিয়। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে তিনি পৃথিবীকে ২১ বার ক্ষত্রিয়শূন্য করেছিলেন। ব্রহ্মক্ষত্রিয় পরশুরামের রাজত্ব ছিল দেশের বিশাল অংশে।
অক্ষয় তৃতীয়াতেই পুরীতে জগন্নাথের রথযাত্রার রথ নির্মাণ শুরু হয় বলে মনে করা হয়। আর সেই কারণেই এই রথ অক্ষয়।
হিন্দু পুরাণ বলছে, এই অক্ষয় তৃতীয়ার পূণ্য তিথিতেই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব হয়েছিল। তাই এই দিনে অনেকে তাঁর পুজোও করেন।
অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই কঠোর তপস্যার মাধ্যমে গঙ্গাকে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন রাজা ভগীরথ।
অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই কুবেরের তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অসীম ধন ও ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এই কারণে এই দিন বৈভবলক্ষ্মীর পুজো হয়। এই দিন কিছু করলে তা অক্ষয় থাকে বলে মনে করা হয়।
অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই হস্তিনাপুরের রাজসভায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের চেষ্টা করেছিলেন দুঃশাসন। দ্রৌপদীর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে অদৃশ্য হয়ে রাজসভায় প্রবেশ করে তাঁকে অনন্তবস্ত্র প্রদান করেন শ্রীকৃষ্ণ।
অক্ষয় তৃতীয়াতেই হিমালয়ের কোলে চার ধামের দরজা খোলা হয়। আর দরজা খুলে দেখা যায় ছ’মাস আগে যে অক্ষয়দ্বীপ জ্বালিয়ে রেখে আসা হয়েছিল তা তখনও জ্বলছে।
অক্ষয় তৃতীয়াতেই শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা হয় বাল্যসখা সুদামার। এক মুঠো চালের বিনিময়ে সুদামার সব দুঃখ – কষ্ট মোচন করেন শ্রীকৃষ্ণ।