দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ আর পাঁচ জন অভিনেতার থেকে তিনি বরাবরই আলাদা। আলাদা তাঁর কথাবার্তায়, তাঁর উপস্থাপনায়। একের পর এক হিটের দৌড়ে যখন গোটা বলিউড প্রতিযোগিতায় মেতে রয়েছে, যখন একের পর এক ছবি নিয়ে আত্মপ্রচারে মেতে রয়েছেন অনেকে, তখনই নিজের অভিনয় জীবনের স্ট্রাগেল নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেন তিনি। তিনি আর কেউ নন, আয়ুষ্মান খুরানা।
'ভিকি ডোনার' ছবি করে রাতারাতি সুপারহিট নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আয়ুষ্মান। এত বড় হিট ছবির পরে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে নিয়ে প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। কিন্তু সে ছবির পরবর্তী সময়ে মোটেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি আয়ুষ্মানের। বরং পরপর তিনটি ফ্লপ ছবি করেছিলেন তিনি।
ফোর্বস ইন্ডিয়ার সঙ্গে একটি আলাপচারিতায় ভিকি বলেন, 'ভিকি ডোনারের পরে আমার একটা বেঞ্চমার্ক তৈরি হয়ে গেছিল। কিন্তু আমি আর সেরকম চরিত্র পাচ্ছিলামই না। ফলে যা হওয়ার তাই হল, পরপর তিনটে ছবি বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ল। তার পরে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর যাত্রা শুরু হল, 'দম লাগাকে হাইশা' দিয়ে। সেই থেকে আবার চারটে ছবি পরপর হিট। ফলে বিষয়টা শুধুই অভিনেতার উপর নির্ভর করছে, তা নয়। কেবল স্ক্রিপ্টরাইটারদের বিষয়ও নয়। এটি একটি টিম গেম, যেখানে সকলের সহযোগিতা জরুরি।'
ডেবিউ ফিল্ম ভিকি ডোনারে ইয়ামি গৌতম এবং আন্নু কাপুরের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন আয়ুষ্মান। সমস্ত মহলে সফল হয় এই ছবি। এই সাফল্যের পরে 'নৌটঙ্কি সালা', 'বেওয়াকুফিয়া', এবং 'হাওয়াইজাদা'তে দেখা যায় আয়ুষ্মানকে, যার কোনওটিই বক্স অফিসে ভাল পারফর্ম করেনি। এর পরে ভূমি পেডনেকারের ডেবিউ ছবি 'দম লাগাকে হাইশা'তে ফের কপাল খুলল আয়ুষ্মানের। এক শিক্ষিত প্লাস-সাইজ মেয়ে এবং সেই সঙ্গে স্কুল ড্রপআউটের ঘটনা নিয়ে তৈরি এই ছবি দর্শক এবং সমালোচক-- দুই মহলেই প্রশংসা পেয়েছে। বক্স অফিসে সাফল্য তো এসেইছে।
জীবনের এইসব ওঠাপড়ার কথা বলতে গিয়ে আয়ুষ্মান খুরানা মনে করিয়ে দেন, এগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, ব্যর্থতা মোকাবিলা করার ক্ষমতা থাকলে, তবেই আপনি একজন সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠবেন। সাফল্য জীবনের খুব খারাপ শিক্ষক এবং ব্যর্থতা হল আপনার ফ্রেন্ড, ফিলজফার এবং গাইড। আপনি যদি কেরিয়ার শুরুর দিকে ব্যর্থ না হন, তাহলে একটা নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছে ব্যর্থতার সঙ্গে মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ে। জীবন এমনই।'
এই প্রথম নয়। এর আগেও আয়ুষ্মান খুরানা ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলেছেন। বছর দুয়েক আগেও এই আলোচনা নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। তাঁর ছবি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যর্থ হওয়ার কারণ পর্যালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, 'সমাজে প্রায় নিষিদ্ধ বিষয়গুলির উপর ছবি করা শুরু করেছি আমি। আমার মনে হয়, এদেশে সেই ছবিই চলে, যা সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মিলে যায় এবং ছবি করার সময় মনে রাখতে হয়, বাচ্চারাও বাবা-মার সঙ্গে বসে দেখবে এই ছবি। আমার শেষ তিনটি ছবির মধ্যে একটি ছিল এলজিবিটিকিউ ফিল্ম, যা কোনও ব্যবসাই করতে পারেনি। কারণ, দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের দেশ হোমোফোবিক।'