দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলার অন্যতম সুপারস্টার তিনি। দীর্ঘ ২৫ বছরের কেরিয়ারের উপহার দিয়েছেন একাধিক হিট। এবার অবশেষে তিনি পা রাখলেন বলিউডে। চলতি মাসের ২০ তারিখ মুক্তি পাচ্ছে খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার। নীরজ পান্ডের সেই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা মিলবে জিতের। তবে জিতের অভিনয়জীবনে এই সিরিজ় তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সিরিজ়ের বাঙালি অভিনেতাদের অনেকেই এর আগে কোনও না কোনও হিন্দি ছবি বা ওয়েব সিরিজ়ে কাজ করেছেন। সেখানে টলিউডের সুপারস্টার হওয়া সত্ত্বেও এই প্রথম বলিউডে পা রাখতে চলেছেন জিৎ। মূল অনুষ্ঠানের পর আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে নতুন সফরের উপলব্ধি ভাগ করে নিলেন নায়ক। সুদর্শন তারকা। হিন্দি উচ্চারণে কোনও সমস্যা নেই। তবু বলিউড সরণিতে হাঁটতে প্রায় ২৫ বছর কেটে গেল!কোনও হতাশা না পুষে রেখেই জিৎ বললেন, ‘‘ঈশ্বরকে আমিও একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতাম। অবশেষে তিনি উত্তর দিয়েছেন। আর তাই আমার কাছে এই সিরিজ়টা এসেছে।’’
জিৎ বিশ্বাস করেন ভাগ্য মানুষকে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছতে সাহায্য করে। তাই পথে দেরি হলেও তাঁর কোনও রকম আক্ষেপ নেই। এই সিরিজ়ে আরও এক বার পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিৎ। অতীতেও একাধিক বার দর্শক তাঁকে এই অবতারে দেখেছেন। সেখানে অর্জুন মৈত্র চরিত্রটি কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? জিৎ বললেন, ‘‘একাগ্রতা এবং নিষ্ঠার অভাব থাকলে যে কোনও চরিত্রই তখন কঠিন মনে হতে পারে। আমার কাছে পরিচালক শেষ কথা। তিনি যা চাইছেন, সেটাই ফ্লোরে দেওয়ার চেষ্টা করি। তাতে বিষয়টা আরও সহজ হয়ে যায়।’’অতীতে টলিউড বহু বার উদ্যোগী হয়েছে এক ছবিতে প্রসেনজিৎ, দেব এবং জিৎকে নিয়ে কাজের। জিৎ প্রযোজিত ছবিতে প্রসেনজিৎ অভিনয় করলেও, এই প্রথম তাঁরা একসঙ্গে। বিষয়টি কি আগামী দিনে জাতীয় পর্যায়ে টলিপাড়ার বহু বন্ধ দরজা খুলে দিতে পারে? জিৎ বললেন, ‘‘আমি খুবই আশাবাদী। বাংলা থেকে অনেকেই এখন মুম্বইয়ে কাজ করছেন। তাঁদের কাজ প্রশংসিতও হচ্ছে। আমার ক্ষেত্রে প্রথম কাজ। তাই দর্শকের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’’
নায়ক হিসেবে পথ চলতে গেলে কাঁধে একাধিক দায়িত্ব নিতে হয়। সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলাতেও হয়। সেখানে কেরিয়ারের এই মুহূর্তে বাংলার সুপারস্টার হিসেবে জিতের কাছে সব থেকে বড় অন্বেষণ, ভাল গল্প। কারণ অভিনেতা বিশ্বাস করেন গল্প ভাল হলে তা নায়ক এবং খলনায়ককে প্রতিষ্ঠা দিতে পারে। তাঁর যুক্তি, ‘‘এ রকম বহু ব্লকবাস্টার ছবি রয়েছে, যার একটি চরিত্র বা সংলাপ আজও মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে।’’
উল্টো দিকে অন্য একটি বিষয়ও সত্য। গত কয়েক বছরে দেব বা জিতের পর টলিপাড়ায় সেই ভাবে নতুন ‘নায়ক’ উঠে আসেনি। সমস্যা কোথায়? জিৎ নিজেও বিষয়টি নিয়ে তাঁর হতাশা প্রকাশ করলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন নতুন প্রজন্মই ইন্ডাস্ট্রিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। বললেন, ‘‘বাংলা থেকে কেন নতুন হিরো উঠে আসছে না, সেটা আমিও বুঝতে পারছি না! আগে বাংলায় নতুন নায়ক আসুক, তার পর তো তাকে জাতীয় পর্যায়ে পাঠানো হবে। এটা আমাদের প্রত্যেকের পাশাপাশি বাংলা ইন্ডাস্ট্রির দুর্ভাগ্য।’’
তবে জিৎ স্বার্থপর নন। বাংলায় নতুন ‘হিরো’ যদি তৈরি হয়, তা হলে তাঁদের পাশে তিনি দাঁড়াতে রাজি, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অভিনেতা। বললেন, ‘‘আমি তো নতুনদের নিয়ে কাজ করতে পছন্দই করি। সে রকম কেউ এলে আমি নিজেও তার ছবি প্রযোজনা করতে ইচ্ছুক।’’ অতীতে ‘চেঙ্গিজ়’ ছবিটিকে জাতীয় স্তরে মুক্তি দিয়েছিলেন জিৎ। ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’-এর মাধ্যমে তাঁর দর্শক বাড়লে, সর্ব ভারতীয় দর্শকের কথা মাথায় রেখেও ভবিষ্যতে আরও ছবি তৈরির ইচ্ছে যে তাঁর রয়েছে, সে কথাও জানিয়ে দিলেন জিৎ।