Editorial

1 year ago

Editorial : তৃণমূলের একার লড়াইয়ের সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা বলল ধান্দাবাজ :রবীন্দ্রকুমার শীল

Present Movement of TMC
Present Movement of TMC

 

তৃণমূল কংগ্রেসের একার লড়াইয়ের সিদ্ধান্তকে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতারা বলতে শুরু করে দিয়েছে ধান্দাবাজি রাজনীতি করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস| তৃণমূল কংগ্রেস এটা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল| সেটা প্রকাশ হওয়াটা মাত্র সময়ের অপেক্ষা ছিল| তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি বিরোধী জোট করবে না সেটা পরিস্কার করে আগে সবাইকে বলতে পারেনি| এবার সেটা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করে দিয়েছে| অজুহাত দিতে শুরু করেছে সাগরদীঘিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে পরাজিত করতে সেখনে কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম একযোগে লড়াই করেছে| তাদের ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের বিপক্ষে গিয়েছে| তার ফলেই সাগর দীঘিতে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী  পরাজিত হয়েছে| 

এদিকে বিজেপি দলের নেতারা বলতে শুরু করে দিয়েছেন যে নেত্রী আশা প্রকাশ করেছিলেন ত্রিপুরাতে তারা আসন বৃদ্ধি করতে পারবে| কিন্তু সেটা করতে পারেনি| মেঘালয়ে তৃণমূল কংগ্রেস পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেছে| কিন্তু সেখানে সরকার গঠন করছে এনপিপি এবং ইউডিপি| নাগালাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের দাপট দেখাতে পারেনি| তবে তৃণমূল কংগ্রেস সবচেয়ে বেশি করে আসন পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল ত্রিপুরাতে| কিন্তু সেখানে কোনও আসন লাভ করতে পারেনি| তার ফলে পূর্ব ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস ক্রমশ ক্ষমতা হারাতশুরু করে দিয়েছে| 

চারদিক থেকে যখন ভোটের ফলাফলের খবর আসতে শুরু করে দিয়েছিল তখন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী নবান্নে উপস্থিত ছিলেন| তিনি জানতেন যে ভোটের ফল তাঁর দলের পক্ষে ভালো হবে না| সেই কারণে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যে আগামি লোকসভার নির্বাচনে তাঁর দল একা লড়াই করবে| আসলে পশ্চিমবঙ্গের কোনও আসন খোয়াতে চান না নেত্রী| তিনি পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার আসনকে অটুট করে রাখতে চান|সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করার আগে তিনি রাজ্যের আসনকে একেবারে নিশ্চিত করতে চান| তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে হবে| বাংলা থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে| তার জন্য পশ্চিমবঙ্গের একটি লোকসভার আসনে ভাগ দেওয়া কোনও দলকে সম্ভব হবে না| বিজেপিকে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে লোকসভার নির্বাচনে রুখতে হবে| তার দিকে লক্ষ্য রেখেই তৃণমূল কংগ্রেস এবারে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে| 


বর্তমান সময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ওপরে বেশি করে জোর দিতে শুরু করে দিয়েছেন নেত্রী| তিনি ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বেশ কয়েকটি দলীয় বৈঠক করেছেন| সেখানে তিনি পরিস্কার করে বলেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেস সব সময়ে মা মাটি মানুষের সঙ্গে সংগ্রাম করেছে|অন্য রাজনৈতিক দল বাংলা অধিকার করলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বৃদ্ধি পেতে থাকবে| ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে| সাধারণ মানুষের হাতে এখন নগদ টাকা নেই|করোনা সংক্রমণ হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ জোরগার করতে পারছে না| রোজগার করার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে| তার ফলেই বহু মানুষ একেবারে অনাহারে থাকতে বাধ্য হচ্ছে| সেই কারণে আমাদের বেশি করে নজর থাকবে লোকসভার নির্বাচনে| 

পশ্চিমবঙ্গে দলের লোকসভার আসন বৃদ্ধি করতে হবে|প্রতিটি তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার প্রার্থীদের জয়ী করিয়ে নিয়ে আসার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে| তার জন্য সজাগ হয়ে থাকতে হবে| তবেই দিল্লীকে জব্দ করা সম্ভব হবে| কেন্দ্রীয় সরকার একেবারে হালে জল পাবে না| সংসদে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে দিল্লিতে লড়াইটা ভালো জমবে|  রাজ্যের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিতে বাধ্য থাকবে কেন্দ্রীয় সরকার| নেত্রী মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে অনৈতিক অঁতাঁত হচ্ছে| কংগ্রেস সিপিএম জোট হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে| তারা আবার জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি দলকে পরস্ত করতে তৃণমূল কংগ্রেসকে পাশে চাইছে|

রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে একজোট হতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলের নেতারা| আর জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে পাশে রেখে বিজেপি বিরোধী দল তৈরি করার খেলা খেলতে শুরু করে দিয়েছে| আসন্ন লোকসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস একাই লড়াই করবে| কারোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলবে না| দরকার নেই আম আদমি দলকে| দরকার নেই এসপি দলকে| দরকার নেই সিপিএম দলকে| দরকার নেই কংগ্রেস দলকে| তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার নির্বাচনে বাংলায় একাই লড়াই করবে| কোনও শক্তির সঙ্গে জোট করবে না|  


এদিকে বিরোধী দলের নেতারা বলতে শুরু করে দিয়েছেন নেত্রীর একার লড়াই সিদ্ধান্ত আসলে বিজেপি দলকে আরও বেশি করে শক্তিশালী করা| বিজেপি দলের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের গোপন আঁতাঁত রয়েছে সেটা পরিস্কার| সেটা আগে বলতে লজ্জ্বাবোধ করছিলেন নেত্রী| প্রথম থেকেই নেত্রী সেই উদ্দেশ্যে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি জোট করার কথা বলতে শুরু করে দিয়েছিলেন| এদিকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী যখন বিজেপি বিরোধী জোট করার আগ্রহ প্রকাশ করতে শুরু করে দিলেন তখন নেত্রী আবার বেঁকে  বসতে শুরু করে দিলেন| এটা পরিস্কার ৱুঝতে পারা যাচ্ছে তিনি বিজেপি দলের এজেন্ট হয়ে কাজ করতে শুরু করেছেন| একই ঢিলে কংগ্রেস এবং সিপিএম দলকে মারার কৌশল নিয়েছেন| কিন্তু এখন তিনি মানুষের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছেন| সেখান থেকে পালাতে পারছেন না| সেই কারণে তিনি বলতে শুরু করেছেন লোকসভার নির্বাচনে তাঁর দল একাই লড়াই করবে| 

২০২১ সালে কংগ্রেস সিপিএম ভোট গিয়েছিল বিজেপির দিকে| এবারে বিজেপি ভোট গিয়েছে কংগ্রেসের দিকে| যার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস পরাস্ত হয়েছে| যারা বিজেপি দলের সঙ্গে আঁতাঁত করে তারা কীভাবে বিজেপি দলের সঙ্গে লড়াই করবে? কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, এটাই হচ্ছে নেত্রীর আসল খেলা| এবারে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস গোপনে নয়,প্রকাশ্যে হাত মেলাতে শুরু করে দিয়েছে| লোকসভা নির্বাচনেই তার চিত্র দেখতে পাওয়া সম্ভব হবে| বিজেপি দল এবং তৃণমূল কংগ্রেস একযোগে কংগ্রেস সিপিএম দলের প্রার্থীদের পরাজিত করা খেলা খেলতে শুরু করে দেবে| বাংলায়  দাঙ্গা করে লোকসভার ভোট হবে| আধা সামরিক বাহিনী থাকবে লোকসভার নির্বাচনকে অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করতে| তবে তার মধ্যে দিয়েই কৌশল অবলম্বন করে সিপিএম এবং কংগ্রেস জোট প্রার্থীকে পরাজিত করার খেলা শুরু হবে| এটাই হবে তৃণমূল বিজেপি লোকসভার নির্বাচনী লড়াই| মুখে বিভেদ অথচ কাজে বন্বুত্ব বজায় অটুটু থাকবে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের|  


You might also like!