রায়গড়, ২৩ জুলাই : মাঝরাতে ঘুমন্ত গ্রামে হঠাৎ নেমে এল মৃত্যুর ছায়া। ছত্তিশগড়ের ধর্মজয়গড় বনাঞ্চলের লাইলুঙ্গা রেঞ্জে মা হাতি ও তার শাবকের হঠাৎ হানা। তার পরই কান্নায় ভেঙে পড়ল তিনটি পরিবার। এক শিশুকন্যা সহ তিনটি প্রাণ চলে গেল মুহূর্তে। প্রথম আঘাত গোসাইডিহ গ্রামে। রাত তখন গভীর। বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে ছিল পাঁচ বছরের একটি বাচ্চা মেয়ে। আচমকাই ছুটে আসে হাতি, তাড়া করে ধরে ফেলে শিশুটিকে। মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় শিশুটি। পরের ঘটনা ঘটে মোহনপুরে। নিজের জমিতে কাজ করছিলেন এক গৃহবধূ। সন্ধে গড়িয়ে রাত হতেই সেই মাঠে ঢুকে পড়ে হাতির দল। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়োন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র ধরা পড়েছে ধর্মজয়গড়ের এক গ্রামে। বাড়ির ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকাই ভেঙে পড়ে কুঁড়েঘরের দেওয়াল। বাইরে দাঁড়িয়ে হাতির দল। দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে সেখানেই প্রাণ যায় তাঁর। বুধবার স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই হাতির যাতায়াত ছিল এই এলাকায়। অথচ বনদফতরের নজর পড়েনি। মঙ্গলবার রাতের ঘটনার পর আতঙ্ক আরও চরমে। বহু গ্রামবাসী রাতেই ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বনদফতর ও পুলিশ। চলছে উদ্ধারকাজ। আশপাশের গ্রামে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এই মৃত্যুমিছিল যেন নতুন করে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বন আর মানুষের সীমারেখা আর কোথাও যেন নেই। ভাঙছে সহাবস্থানের গণ্ডি। বাড়ছে মৃত্যু। ধর্মজয়গড় এখন শুধু শোকস্তব্ধ নয়, রয়ে গেছে আতঙ্কের সুনসান নিস্তব্ধতায়।