দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ আর ঠিক দুমাস পরে পুজো। সেই আনন্দময় পাঁচদিনের মধ্যে একদিন মহাষ্টমী হিসেবে পালিত হয় । দুর্গাপুজোর অষ্টমী ও নবমীর মাঝখানে সন্ধিপুজো হয়। সে পুজোয় দেবীকে ১০৮টি পদ্ম নিবেদন করে। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালিত হয় দুর্গাপুজোর মহাষ্টমী। অষ্টমী ও নবমী তিথির বিশেষ সন্ধিক্ষণে দেবী দুর্গার সন্ধিপুজো হয়। ১০৮ লাল পদ্ম এই পুজোয় দুর্গাপূজার পায়ে উত্সর্গ করে আর জ্বালানো হয় ১০৮টি মাটির প্রদীপ। অষ্টমী আর নবমী তিথির মাঝখানে হয় সন্ধিপুজো। সংস্কৃত মন্ত্রের উচ্চারণে মুখরিত হয়ে ওঠে আকাশ আর বাতাস। শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, ঢাকের বাজনা,ঘন্টা,পটকা ইত্যাদি সব মিলিয়ে শব্দের স্রোতে যেন সুদূর অব্দি ভেসে যায় চারপাশে। সে মন্ত্রোচ্চারণ আর ১০৮ প্রদীপের আলোয় উজ্জ্বলিত হয়ে ওঠে দেবীর মিষ্টি মুখমন্ডল। মহাষ্টমী তিথির বিদায়ে আর মহানবমীর আগমনে সন্ধিপুজো করে।
জেনে নিন কেন ১০৮ পদ্ম নিবেদনের রীতি রয়েছে রয়েছে সেদিন?
পুরাণ অনুসারে দেবী দুর্গা এই দুই তিথির মিলনক্ষণে আবির্ভূতা হোন দেবী চামুন্ডা-র রূপে আর চন্ড এবং মুন্ড নামক দুই ভয়ানক অসুরকে তিনি বধ করেছিলেন । অন্যদিকে কৃত্তিবাস রচিত রামায়ণে লেখা যে অযোধ্যার রাজা দশরথের জ্যেষ্ঠপুত্র রামচন্দ্র দশানন রাবণকে বধ করার জন্য আশ্বিনমাসে দেবী দুর্গার আগমন ঘটিয়েছিলেন। পুজো করার সময়ে, দেবীর পায়ে ১০৮ পদ্ম নিবেদন করার জন্য হনুমানকে দেবীদহ নামক হ্রদ থেকে ১০৮টি পদ্মফুল তুলে আনতে বলেন। কিন্তু হনুমান সেখানে ১০৭টি পদ্ম পান সেখানে আর পদ্ম ছিল না কারণ বহুদিন ধরে অসুর বধ করতে রত থাকায় দেবীর সারা শরীরে একশো আটটি স্থানে ক্ষতচিহ্ন সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহের অসহ্য জ্বালা দেখে স্বামী দেবাদিদেব মহাদেব কাতর হয়ে যান। মহাদেব তাঁকে বলেন দেবীদহ হ্রদে স্নান করলে এ জ্বালা সারবে। দেবীদহে মায়ের ডুব দেওয়ার ফলে একশো সাতটি ক্ষত থেকে সৃষ্টি হয়েছিল একশো সাতটি পদ্ম ফুলের। মহাদেব দেবীর এ জ্বালা সহ্য করতে না পারায় তাঁর চোখ থেকে এক ফোঁটা চোখের জল চলে আসে মায়ের একশো আটতম ক্ষতের ওপর। দেবীদহে স্নানকালে সেই অশ্রুসিক্ত ক্ষতটি থেকে যে পদ্মের জন্ম হয়েছিল সেটি মা নিজে নিয়ে নেন কারণ স্বামীর অশ্রুসিক্ত পদ্মফুলটি কেমন করে পায়ে নেবেন তিনি? যাহোক, এক পদ্ম কম থাকায় রামচন্দ্র নিজের নীল পদ্মের মতো চোখ তির দিয়ে বধ করে দেবীর পায়ে নিবেদন করতে উদ্যত হয়ে বলেন, "যুগল নয়ন মোর ফুল্ল নীলোত্পল সংকল্প করিব পূর্ণ বুঝিয়ে সকল। একচক্ষু দিব আমি দেবীর চরণে" তখন দেবী আবির্ভূতা হয়ে তাঁকে শান্ত করে বলেন "অকালবোধনে পূজা কৈলে তুমি, দশভুজা বিধিমতে করিলা বিন্যাস। লোকে জানাবার জন্য আমারে করিতে ধন্য অবনীতে করিলে প্রকাশ ।। রাবণে ছাড়িনু আমি, বিনাশ করহ তুমি এত বলি হৈলা অন্তর্ধান"