দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- বালুচরির শাড়িতে এই গল্পকথাই এবার মাতাবে পুজোর বাজার। বিষ্ণুপুরের শিল্পী অমিতাভ পালের হাতের জাদুতে শাড়ির আঁচলে ফুটে উঠেছে গোটা রামায়ণ।তবে এই প্রথমবার নয়, বিষ্ণুপুরের শিল্পী অমিতাভ পাল প্রতিবছরই শাড়িতে ফুটিয়ে তোলেন সাহিত্য সংস্কৃতির বিভিন্ন রূপ। কখনও শকুন্তলার কাহিনী, কখনও আবার আদিবাসী নৃত্য, বারংবার পুরাণের বিভিন্ন গল্প কথা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন শাড়িতে। এবার বাল্মিকির রামায়ণের গল্প কথা তিনি ফুটিয়ে তুললেন নিজের হাতে।
শাড়িতে রামায়ণের কাহিনী ফুটিয়ে তোলার প্রসঙ্গে শিল্পী জানান, এই পর্যন্ত পাঁচটি রামায়ণ অনুসারে তিনি তৈরি করতে পেরেছেন। এক একটি শাড়ি তৈরি করার জন্য লেগেছে ২৩ দিন। প্রতিটি শাড়ি ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি। যে শাড়ি গুলি বিক্রি করেছেন সেগুলি কিনেছেন রাজ্য সরকারের সংস্থা তন্তুজ এবং কলকাতা দুটি নামী বিপণি সংস্থা। যদিও একটি শাড়ি তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।এই বছর পুজোর বালুচরির ডিজাইন নিয়ে অমিতাভ বলেন, শাড়ির আঁচলের ভেতরের অংশে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে পুষ্পক রথে সীতা হরণ করে নিয়ে যাওয়া দৃশ্য। আঁচলের শুরুতে আঁকা রয়েছে লব কুশের কাহিনী। মহা ঋষি বাল্মিকীর লব কুশকে শিক্ষাদান থেকে শুরু করে সীতার বনবাস যাত্রা, সবকিছু মিলিয়ে তৈরি হয়েছে সাতকাণ্ড রামায়ণের এই বালুচরি।
শাড়ি গুলি তৈরি হয়েছে লাল, রানী, সবুজ, তসর এবং পেস্তা কালারে। বালুচরি মানেই যে ডিজাইন মাথায় আসে, তার থেকে বেরিয়ে কিছু বৈচিত্র্য নিয়ে আসার চেষ্টা গত কয়েক বছর ধরেই করছেন নবীন প্রজন্মের শিল্পী অমিতাভ। এর আগেও মহাভারত রামায়ণ সহ পুরাণের বিভিন্ন খন্ড চিত্র তিনি তুলে ধরেছেন শাড়ির মাধ্যমে। তুলে ধরেছেন রুপশালী, তিন কন্যা, নবীন শাড়ি সহ বিভিন্ন নকশা।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় বালুচরি শাড়ি তৈরি করার জন্য একাধিকবার রাজ্য সম্মান পেয়েছেন বছর ৪৬-এর এই শিল্পী। শুধু দুর্গাপুজো নয়, সারা বছর শাড়ি তৈরি করেন তিনি। অমিতাভের হাতের তৈরি শাড়ি কিনে নেন রাজ্য সরকারের তন্তুজ এবং বিশ্ব বাংলা। প্রতিবছর নতুন ডিজাইন তৈরি করার জন্য উৎসাহ এবং আর্থিক সহায়তা পান তন্তুজ থেকে, যার ফলে সবদিক থেকেই শিল্প সত্তাকে জাগিয়ে রাখার উৎসাহ পান অমিতাভ।