দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- মহিষাদলের বাসুলিয়ার রায়বাড়ির দুর্গাপুজো এই বছর ৪৫১ বছরে পা দিল। রায়বাড়ির এই পুজো এলাকাবাসীর কাছে গর্বের বিষয়, এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে এটি একটি মহামিলনের উপলক্ষ। প্রাচীনকালে এই পুজোতে মৃন্ময়ী প্রতিমার পরিবর্তে ঘটে পুজো হত, যা ১৯৭৪ সালে ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের হাত ধরে বদল হয়। তার দৌহিত্র দেবদুলাল রায় জানান, সেই বছর প্রথমবারের মতো মাটির দুর্গা প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছিল, যা রায়বাড়ির পুজোর ধারায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
রায়বাড়ির পুজো ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে দশমী পর্যন্ত চলে। অষ্টমীতে রীতি অনুযায়ী কলা, আখ, কুমড়ো এবং লেবু বলি দেওয়া হয়। নবমীতে কুমারী পুজো ঘিরে এলাকাবাসীর ভিড় জমে যায়। ঠাকুরদালান সেজে ওঠে বাহারি আলোয়, যা এলাকায় এক আলাদা উন্মাদনা সৃষ্টি করে।
এ বনেদি বাড়ির পুজোয় ভোগ বিতরণও অন্যতম আকর্ষণ। একসময় ২০ হাজার মানুষ ভোগ খেতেন, তবে এখন সেই সংখ্যা কমে প্রায় দেড় থেকে দু’হাজারে দাঁড়িয়েছে। নবমীর দিন বিশেষ এই অন্নভোগ বিতরণ করা হয়। পুজোর সময় গোটা রায় পরিবারের সদস্যরা, যাঁরা দূরে থাকেন, তারা সকলেই বাড়িতে ফিরে আসেন এবং পুজোর ক’টা দিন পারিবারিক মহামিলন ও আড্ডায় মেতে ওঠেন।
দেবদুলাল রায় জানান, তমলুকের বঁইচবাড়ির রাজা নারায়ণ রায়বাহাদুরের বংশধররাই মহিষাদলে এসে এই জমিদারিতে স্থায়ী হয়েছিলেন এবং সেই সময় থেকেই রায়বাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা হয়, যা আজও একই ঐতিহ্য ও আড়ম্বরে পালিত হয়।