
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হলিউডের খ্যাতনামা পরিচালক রব রেইনার ও তাঁর স্ত্রী মিশেলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সমগ্র হলিউড তোলপাড়! রবিবার গভীর রাতে লস অ্যাঞ্জেলসের নিজ বাসভবনে হলিউডের খ্যাতনামা পরিচালক রব রেইনার ও তাঁর স্ত্রী মিশেলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হলেও, তদন্তের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আবার এটা মাদকাসক্ত ছেলে নিকের কীর্তি বলেই মনে করছে মার্কিন পুলিশ, তবে পারিবারিক সূত্র ও তদন্ত-সংলগ্ন মহলে নানান তত্ত্ব ঘুরপাক খাচ্ছে—এর মধ্যে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রের আশঙ্কাও উত্থাপিত হয়েছে বলে দাবি।
এই আবহেই বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শোকবার্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে গিয়ে তিনি রেইনারকে ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় স্মরণ করেছেন, যা পশ্চিমী বিনোদন ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। রেইনারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থান ও ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে মন্তব্য করায় শোকবার্তার ভাষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।

রেইনারের সমালোচনা করে ট্রাম্প তাঁকে ‘একসময়কার প্রতিভাবান পরিচালক’ এবং ‘নির্যাতিত, সংগ্রামী’ বলে সম্বোধন করেছেন। শোকবার্তায় ব্যঙ্গ করে ট্রাম্প লেখেন, “গত রাতে হলিউডে একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। একজন নির্যাতিত ও সংগ্রামী পরিচালক রব রেইনার সস্ত্রীক গত হয়েছেন। এই রেইনার একদা অত্যন্ত প্রতিভাবান পরিচালক তথা কৌতুক অভিনেতা ছিলেন। তবে জানা যায়, পরিচালক নাকি ট্রাম্প বিরোধী মানসিক রোগে ভুগছিলেন। আর সেই ‘ট্রাম্প ডিরেঞ্জমেন্ট সিনড্রোম’-এ ভুগে মানসিক বন্ধ্যাত্বের জেরেই অন্যদের রাগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।” জীবদ্দশায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করে যেভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন রব রেইনার, শোকবার্তায় সেকথা উল্লেখ করেও খোঁচা দিতে ভোলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সংযোজন, “আসলে ট্রাম্প প্রশাসন ভালো কাজ করে আমেরিকায় স্বর্ণযুগ নিয়ে আসায় রেইনারের ‘প্যারানয়া’ অর্থাৎ মস্তিষ্কভ্রম উত্তরোত্তর বেড়ে যাচ্ছিল। আর সেটাই উদভ্রান্তের মতো সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন উনি। যাই হোক, রব এবং মিশেল এবার শান্তিতে ঘুমোন।” এহেন আকস্মিক মৃত্যুতে রেইনার দম্পতির উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ধরণের বিদ্রুপাত্মক মন্তব্যে স্বাভাবিক ভাবেই গভীর বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রব রেইনারের চলচ্চিত্র-জীবন ছিল বহুমাত্রিক। ‘হোয়েন হ্যারি মেট স্যালি’, ‘দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড’, ‘স্লিপলেস ইন সিয়াটেল’, ‘দ্য স্টোরি অফ আস’—এমন একাধিক জনপ্রিয় ছবির নির্মাতা হিসেবে তিনি পরিচিত। পাশাপাশি সামাজিক ও নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত নানা ইস্যুতে তিনি সরব ছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়। এই কারণে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে হলিউডের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসসহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি শোকপ্রকাশ করেছেন। তবে সব কিছুর মধ্যেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়ে গেছে ট্রাম্পের মন্তব্য—শোকবার্তা কি সংযত হওয়া উচিত ছিল, নাকি রাজনৈতিক বিদ্রুপ এড়ানো যেত? এই প্রশ্ন ঘিরেই এখন উত্তাল পশ্চিমী বিনোদুনিয়া ও রাজনৈতিক মহল।
“We mourn the loss of three Great American Patriots in Syria, two soldiers, and one Civilian Interpreter. Likewise, we pray for the three injured soldiers who, it has just been confirmed, are doing well. This was an ISIS attack against the U.S., and Syria, in a very dangerous… pic.twitter.com/uK3t5dlMfL
— The White House (@WhiteHouse) December 13, 2025
