আগরতলা : জাইকা প্রকল্পের কাজগুলিকে আরও ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন যাতে মানুষ দ্রুত তার সুফল পেতে পারে। সচিবালয়ে ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্পের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, জাইকা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল সম্পদ সৃষ্টি। এই প্রকল্পে রাজ্যে মানুষের জীবনজীবিকার মানোন্নয়নে সুস্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।এই সভায় মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক কে এস শেঠি, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় রাজ্যে রূপায়িত জাইকা প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মসূচির বর্তমান অবস্থা, অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও নতুন উদ্যোগসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্পের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ও প্রকল্প অধিকর্তা ড. এ এম কানফাদে জানান, ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্পটি বর্তমানে সাস্টেনেবল ক্যাচমেন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট ইন ত্রিপুরা (স্ক্যাটফর্ম) নামে রাজ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি ২০১৯-২০ সাল থেকে শুরু হয়েছে এবং এর মেয়াদ ১০ বছর। প্রকল্পের খরচ প্রায় ১০০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি রাজ্যের ৭টি জেলায় রূপায়িত হলেও ধলাই জেলার ৩টি জায়গায়ও প্রকল্পটি চালু রয়েছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয়ক দফতরের এক পর্যালোচনা সভায় রাজ্যে বনায়ন প্রকল্প রূপায়নে দেশে ত্রিপুরাকে দ্বিতীয় সেরা পারফরমিং রাজ্য হিসাবে ঘোষনা করা হয়। সভায় প্রকল্প অধিকর্তা জানান, সাস্টেনেবল ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট- এর অন্তর্গত রাজ্যে ৪৫০টি যৌথ বনায়ন ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭টি সেন্ট্রাল নার্সারি, ৩টি হাইটেক নার্সারী এবং ৮৬টি ডিসেট্রেলাইজড পিপলস নার্সারি গড়ে তোলা হয়েছে। সেন্ট্রাল নার্সারী এবং হাইটেক নার্সারিগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নও অব্যাহত রয়েছে বলে প্রকল্প অধিকর্তা ড. এ এম কানফাদে জানান। এগ্রো ফরেস্ট্রি রূপায়নের উদ্যোগ হিসেবে প্রাপ্ত ৩০৫৯ হেক্টরে বনাধিকার আইনের পাট্টা জমিতে ক্লাস্টার ভিত্তিতে বনায়ন করা হয়েছে। ৫,১৩০.৪৯ হেক্টর এলাকায় আর্টিফিসিয়াল রিজেনারেশন বনায়ন এবং ১৪,৫৪১৭০ হেক্টর এলাকায় এইডেড ন্যাচরাল রিজেনারেশন বনায়ন করা হয়েছে।
সভায় প্রকল্প অধিকর্তা জানান, ৫ হেক্টর এলাকার জলাশয়ে এখন পর্যন্ত ৫৬২টি চেকড্যাম এবং ২ হেক্টর এলাকার জলাশয়ে ৪৩৪টি চেকড্যাম খনন করা হয়েছে। তাছাড়া ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্পে (চ্যাটফর্ম) ৩৩৭টি অমৃত সরোবর চেকড্যাম তৈরী করা হয়েছে। মানুষের জীবনজীবিকার মান উন্নয়নে ১২:৩৭টি স্বসহায়ক দল গঠন করা হয়েছে। এই স্ব-সহায়ক দলগুলিতে যুক্ত মহিলাদের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়াও ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্পে ২৯০টি মাল্টি ইউটিলিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। ২৮টি বিট অফিস নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, রাজ্যে ৩টি নতুন ইকো টুরিজম কেন্দ্রের উন্নয়ন সহ ৩টি ইকোপার্কের উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে। চিহ্নিত নতুন ৩টি ইকো টুরিজম কেন্দ্র হল সীতাছাড়া জলাশয়, ডুম্বুর জলাশয় ও জম্পুইহিল।