দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। তবে পারিবারিক সম্প্রীতির শ্রেষ্ঠ নিদর্শন যে অনুষ্ঠানটিকে বলা হয়, সেটি হল জামাইষষ্ঠী। এই দিন শাশুড়িরা জামাইয়ের কল্যানার্থে পুজো দেন এবং জামাই আদর করার পর তবেই খাবার খান। এই দিনটি শুধু শাশুড়ি বা জামাইকে ঘিরে তৈরি হওয়া একটি উৎসব নয়, এই উৎসবটি দুটি পরিবারের মিলন উৎসব।কিন্তু কেন পালন করা হয় এই জামাই ষষ্ঠী জানেন?
ভারতবর্ষ তথা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এককালে নিয়ম ছিল কন্যা পুত্রবতী না হওয়া পর্যন্ত পিতার গৃহে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকী মা-ও কন্যা গৃহে যেতে পারবে না।
ফলে যদি কোনও কন্যার সন্তান ধারনে সমস্যা হত তখন তারা বহুদিন বাপের বাড়ি আসতে পারত না। তাই মূলত মেয়েদের মুখ দেখার জন্যই এই অনুষ্ঠানের প্রচলন হয়েছে। জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীকে বেছে নেওয়া হয় জামাই ষষ্ঠী হিসাবে।
এ ছাড়াও লোকমুখে আরও একটি গল্পের প্রচলন রয়েছে। বলা হয়, একটি পরিবারে দুটি বউ ছিল, দুই বউয়ের মধ্যে ছোট বউ বাড়িতে ভাল রান্না হলেই লুকিয়ে খেয়ে নিত। পরে বিড়ালের উপরে খাবার খেয়ে নেওয়ার দোষ চাপাত। এদিকে বিড়াল হল ষষ্ঠীর বাহন নিজের বাহনের নামে এমন অপবাদ তিনি মেনে নেবেন কেন? ফলস্বরূপ ছোট বউয়ের সন্তানের প্রাণ কেড়ে নেন। কষ্টে ভেঙে পড়েন সেই বাড়ির ছোট বউ।
পরে এক বৃদ্ধার রূপ নিয়ে আসেন মা ষষ্ঠী। ছোট বউকে তাঁর আচরণের কথা মনে করিয়ে দেন। ছোট বউ নিজের ভুল বুঝতে পারায় তাকে তার সন্তান ফিরিয়ে দেন ষষ্ঠী দেবী। তবে এই ঘটনা জানতে পেরে ছোট বউকে আর বাপের বাড়ি যেতে দেয় না তার শ্বশুর বাড়ির লোক। কিন্তু ষষ্ঠী পুজোর দিন ছোট বউয়ের বাড়ি থেকে মেয়ে জামাইকে দেখার জন্য নিমন্ত্রণ করেছিলেন
তবে ঘটনাটি জানতে পেরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে যেতে বাধা দেয়। ষষ্ঠী পূজার দিন তাদের মেয়েকে দেখতে আগ্রহী বাবা-মা তাদের জামাই এবং তাদের মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। সব রাগ, ক্ষোভ ভুলে ওই দিন আবার মেয়ে বাড়ি যায়। তারপর থেকেই ফের জামাই ষষ্ঠীর অনুষ্ঠানের প্রচলন হয়।