দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘৯’ টিপলেই বিপদ। কোনও ফোন পেয়ে এই বাটন টিপলেই হ্যাকড হতে পারে মোবাইল। কিন্তু এই বিপদের প্রতিকারের রাস্তা পাচ্ছে না পুলিশও। আর তাতেই বাধছে সমস্যা। কারণ, যে নম্বর থেকে ওই জালিয়াতির কল আসছে, সেটির ‘সার্ভিস প্রোভাইডার’ কে বা সেটি কোন মোবাইল সংস্থার, তা বুঝতেই কালঘাম ছুটছে পুলিশের। পুলিশ আধিকারিকদের ধারণা, সিম বক্সের মাধ্যমে করা হচ্ছে এই প্রতারণা। কলকাতার কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বর কাছেও এই ধরনের ফোন এসেছে বলে খবর পেয়েছে লালবাজার। তাই এই ব্যাপারে শহরবাসীকে সতর্কও করছেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ধরনের ফোনের ‘কলার’ কোনও মানুষ নয়। একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসছে মোবাইলে। একটি যান্ত্রিক কণ্ঠস্বর মূলত ইংরেজি ও হিন্দিতে জানাচ্ছে, ‘‘কেওয়াইসি-র কারণে আপনার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই সমস্যা এড়ানোর জন্য এখনই ‘৯’ বোতামটি টিপুন।’’ পুলিশের সূত্র জানাচ্ছে, মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাবে শুনে অনেকেই ঘাবড়ে যাচ্ছেন। কেউ ‘৯’ বোতামটি টিপেও দিচ্ছেন। আর সেই মুহূর্তের জন্যই অপেক্ষা করে থাকছে সাইবার জালিয়াতরা। কেউ ওই বোতামটি টিপলেই জালিয়াতরা হ্যাক করে নিচ্ছে মোবাইল। মোবাইলের যাবতীয় তথ্য চলে আসছে সাইবার জালিয়াতদের হাতে। পুলিশের মতে, আগে বিভিন্ন পদ্ধতিতে লিঙ্ক পাঠাত জালিয়াতরা। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই মোবাইলের তথ্য পেয়ে যেত জালিয়াতরা। লাগাতার প্রচারের ফলে এখন অনেকেই যে কোনও লিঙ্কে ক্লিক করতে চান না। তাই পদ্ধতি পালটাচ্ছে জালিয়াতরা। তারা নিজেদের মোবাইল সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিয়েই ‘৯’ ক্লিক করিয়ে মোবাইল হ্যাক করার চেষ্টা করছে। মোবাইল হ্যাক বা ক্লোন করে ওই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য জেনে তারা টাকা হাতানোর ছক কষছে।
এই ধরনের একাধিক ঘটনা সামনে আসার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। কিন্তু তদন্ত আটকে যায় মাঝপথে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, যে ফোন নম্বর থেকে কল আসে, তার সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়েই ধন্দে পড়েন পুলিশ আধিকারিকরা। কারণ, সেই নম্বরটি কোন সংস্থার, তা-ও জানা যায়নি। এমনকী, কোন জায়গা থেকে ফোন করা হয়েছে, টাওয়ার লোকেশন দেখে সেই তথ্যও মেলেনি। কার নামে সিমকার্ড, তা-ও জানা যাচ্ছে না। তাই এই সাইবার জালিয়াতদের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, বিশেষ কোনও জায়গা থেকে একসঙ্গে অনেকগুলি প্রি অ্যাকটিভেটেড সিমকার্ড কিনছে সাইবার জালিয়াতরা। কিন্তু সেগুলির জন্য কোনও কেওয়াইসি বা পরিচয়পত্রর কপি সঙ্গে সঙ্গে দিচ্ছে না। মাঝখানে পাঁচ বা সাতদিনের ফাঁক থাকছে। এর মধ্যে ওই সিমকার্ডগুলি দিয়ে ফোন করা হচ্ছে বলে নম্বরটি কার নামে অথবা টাওয়ার লোকেশন, কিছুই ধরা পড়ছে না। আবার সিমবক্সে একসঙ্গে শতাধিক সিমকার্ড রেখে জালিয়াতির জন্য এগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, এমনও সম্ভাবনা রয়েছে। লালবাজারের গোয়েন্দাদের মতে, শুধু সাইবার জালিয়াতরাই নয়, জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরাও নিজেদের মধে্য যোগাযোগের জন্য এই পদ্ধতিতে সিমকার্ড ব্যবহার করতে পারে। তাই এই ব্যাপারে হাল ছাড়েননি পুলিশ আধিকারিকরা। এই নম্বরগুলি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।