দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২৩ সালে সালওয়ান মোমিকার নাম উঠে আসে খবরের শিরোনামে। ২০২৩ সালে তিনি পবিত্র কোরানের একের পর এক কপিতে আগুন ধরাতে শুরু করেন। এই ঘটনায় বিশ্ব তোলপাড় হয়ে যায়। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চূড়ান্ত ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনার এক বছরের মধ্যে এবার ইরাকি শরণার্থী সালওয়াল মোমিকাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সুইডেনের স্টকহোমের কাছে একটি বাড়িতে থাকতেন সালওয়ান মোমিকা।সেখানেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
সুইডিশ সংবাদমাধ্যম এসভিটি জানিয়েছে, ৩৮ বছর বয়সী মোমিকা একটি বাড়ির ভেতর গুলিবিদ্ধ হন। হত্যার সময় তিনি টিকটকে লাইভে ছিলেন। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার ফোনটি নিয়ে সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সুইডেনে থেকে সালওয়াল মোমিকা বলেন, কোরান পুড়িয়ে তাঁর এই প্রতিবাদ ইসলামের বিরুদ্ধে। মুসলিম মানুষের বিরুদ্ধে নয়। কোরানে যা লেখা রয়েছে, তা থেকে সুইডেনের মানুষকে রক্ষা করতেই তিনি ধর্মগ্রন্থ পুড়িয়েছেন বলে মন্তব্য করেন সালওয়ান মোমিকা। ওই সময় সালওয়ান মোমিকার প্রতিবাদকে সমর্থন করে সুইডেন পুলিশ। তাঁকে কোনওভাবে গ্রেফতার করা হয়নি সুইজেনের পুলিশের তরফে। তবে সুইডেনের আদালতের তরফে সালওয়ান মোমিকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়। সালওয়ান মোমিকা যে ধরনের কাজ করেছেন,তার জেরে সালওয়ানকে যাতে সুইডেন থেকে বের করে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে নির্দেশ দেয় আদালত।
ইরাকের নিনেভে প্রদেশে জন্ম এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন সালওয়ান মোমিকা। তবে এক ক্যাথোলিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন সালওয়ান। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে যখন ইরাকে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, সেই সময় মোমিকা মসুল হেডকোয়ার্টারে ছিলেন এবং প্রধান নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ২০১৪ সালে আইসিসের হাতে ধরা পড়েন মোমিকা। ইরাককে যাতে ইসলামিক স্টেটে পরিণত করা না যায়, তার জন্য যাঁরা আন্দোলন করচিলেন ওই সময়, মোমিকা ছিলেন তাঁদের একজন। ফলে আইসিসের হাতে মসুল থেকেই ধরা পড়েন মোমিকা। এরপর ২০১৭ সালে মোমিকা ইরাক থেকে জার্মানিতে পালিয়ে যান। এরপর ২০১৮ সালে সুইডেনে অ্যাসাইলামে আশ্রয় পান মোমিকা কোনওক্রমে। ওই সময় থেকেই তাঁকে ইরাকি শরণার্থী হিসেবে অ্যাসাইলামের অন্তর্ভুক্ত করে সুইডেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে তিনি কিছুদিনের জন্য সুইডেনে রেসিডেন্স পারমিট পান। যা ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। এরপর মোমিকা সুইডেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। তবে তা খারিজ হয়ে যায় একাধিক কারণে। আর ঠিক এমতাবস্থায় সালওয়ান মোমিকা-র বাড়িতে ঢুকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়।