International

1 month ago

Donald Trump:ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে একচ্ছত্র ক্ষমতা পাবেন রবার্ট কেনেডি-মাস্ক

Donald Trump
Donald Trump

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ-  কয়েক দিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শেষ মুহূর্তের প্রচারে ছুটছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজনই এখন পশ্চিমের রাজ্য নেভাদায়। সমাবেশে তুলে ধরছেন নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্পের সুরে রয়েছে বেশ ভিন্নতা, বড় চমক। এমনই একটি চমক হলো প্রেসিডেন্ট হলে তিনি রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ও ইলন মাস্কের মতো চরিত্রদের নিয়ে সরকার ঢেলে সাজাতে চান।

কেনেডি জুনিয়র যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর রবার্ট এফ কেনেডির ছেলে। তাঁর আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা। এবারের নির্বাচনে প্রথমে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তবে গত আগস্টে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ট্রাম্পকে সমর্থন জানান। রিপাবলিকানরা সরকার গড়লে, তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একচ্ছত্র ক্ষমতা দিতে চান ট্রাম্প। গত সোমবার নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে এক নির্বাচনী সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে (কেনেডি জুনিয়র) খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে অবাধে কাজ করার সুযোগ দেব।’যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে কেনেডি জুনিয়র অবশ্য বেশ কিছু ইতিবাচক কথা বলেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আবার স্বাস্থ্যকর’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। কাজ করতে চান পরিবেশবান্ধব কৃষিকাজ এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষার পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘খাবার, পানি ও বাতাসকে বিষমুক্ত’ করতে চান তিনি। তবে এসব কীভাবে হবে, সে সম্পর্কে খোলাসা করেননি। আর এর আগে স্বাস্থ্য নিয়ে নানা বক্তব্য দিয়ে বিতর্কিতও হয়েছেন তিনি। যেমন টিকা নেওয়াকে তুলনা করেছেন নাৎসি জার্মান যুগের সঙ্গে। বলেছেন, পানিতে মেশা রাসায়নিক নাকি শিশুদের সমকামী করে তোলে।

সরকারে গেলে মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ককে কেনেডি জুনিয়রের চেয়ে বড় দায়িত্ব দিতে চান ট্রাম্প। মাস্ককে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমাতে চান তিনি। সম্ভাব্য ট্রাম্প সরকারে মাস্কের কী ভূমিকা হতে পারে, তা নিয়ে গত মাসে কথা বলেছেন সিএনএনের সাংবাদিক ডেভিড গোল্ডম্যান। তাঁর মতে মাস্ক নাকি বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তিনি সরকারের ২ ট্রিলিয়ন ডলারের খরচ কমাতে পারবেন।

তবে মাস্কের ২ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ কমানোর পরিকল্পনাকে ‘বোকামি’ বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অর্থমন্ত্রী ল্যারি সামার। তাঁর মতে, সরকারি চাকরিজীবীদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে এই অর্থ বাঁচানো যাবে না। কারণ, মার্কিন বাজেটের মাত্র ১৫ শতাংশ বেতন। তাই সরকারি সব চাকরিজীবীকে সরিয়ে দিলেও ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাঁচানো যাবে না।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে বড় সমর্থন দিচ্ছেন মাস্ক। প্রচার-প্রচারণার জন্য দিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অংশ হলে তা মাস্কের প্রতিষ্ঠান-স্পেসএক্স ও টেসলার জন্য বড় সুবিধা দিতে পারে। বর্তমানে স্পেসএক্সের ওপর মার্কিন সরকারের বড় নির্ভরশীলতা রয়েছে।

ট্রাম্প সরকার গঠন করলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রকে ঢেলে সাজাতে চান মাস্ক। গত মাসে পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ শহরে বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছিলেন, ‘চলুন, একেবারে প্রথম থেকে শুরু করি।’নির্বাচনের ঠিক আগে রয়টার্স/ইপসসের জরিপ বলছে, দেশব্যাপী জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র ১ শতাংশ এগিয়ে আছেন কমলা। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১ হাজার ১৫০ নাগরিকের ওপর তিন দিন ধরে চালানো এই জরিপের কাজ গত রোববার শেষ হয়। গতকাল প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, কমলা ৪৪ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন। অপর দিকে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৩ শতাংশ।

নির্বাচন থেকে বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর গত জুলাইয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হন কমলা হ্যারিস। তখন থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিটি জরিপে এগিয়ে আছেন তিনি। তবে সেপ্টেম্বরের শেষের দিক থেকে দুজনের ব্যবধান কমতে থাকে। গত ১৬ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত রয়টার্স/ইপসসের করা আরেকটি জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে ২ শতাংশ এগিয়ে ছিলেন কমলা।

অর্থনীতি, বেকারত্ব ও চাকরির দিক দিয়ে কে এগিয়ে আছেন—এমন প্রশ্নে সর্বশেষ জরিপে ৪৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়েছেন। ৩৭ শতাংশ সমর্থন দিয়েছেন কমলাকে। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ২৬ শতাংশ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সমস্যা অর্থনীতি। এরপর ২৪ শতাংশ নাগরিক বড় সমস্যা হিসেবে দেখিয়েছেন রাজনৈতিক চরমপন্থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের চেয়ে কমলা ভালো অবস্থানে রয়েছেন বলে মনে করেন জরিপে অংশ নেওয়া ৪০ শতাংশ ব্যক্তি। এর বিপরীতে ৩৮ শতাংশ ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে এর আগে ১৬ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত করা জরিপে রাজনৈতিক চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের চেয়ে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন কমলা।

You might also like!