দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক ঃমধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ফের চরমে উঠেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে শক্তি প্রদর্শন করল ইরান। এই আক্রমণের পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি সাফ জানিয়ে দিলেন— “এবার কোনও দয়া দেখানো হবে না”। তাঁর এই বার্তা বিশ্ব রাজনীতিতে এক গভীর বার্তা বহন করছে।
জানা গিয়েছে, ইরান অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার গতি ও ধ্বংসক্ষমতা দুই-ই অনেক বেশি। এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র কোনও রাডার সিস্টেম সহজে ধরতে পারে না এবং প্রতিহত করা কঠিন। এমন অস্ত্র প্রয়োগে ইরান যে ইসরায়েলকে একটি কড়া বার্তা দিতে চায়, তা স্পষ্ট।
খামেনি বলেছেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু যারা শান্তি ধ্বংস করে, তাদের বিরুদ্ধে আর দয়া দেখানোর সময় নেই।” তাঁর এই মন্তব্য শুধু ইসরায়েলের জন্যই নয়, বরং তার মিত্রদের প্রতিও একটি কঠিন বার্তা। তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনের উপর অন্যায়ের বিরুদ্ধে ইরান চুপ করে থাকবে না। যারা গণহত্যা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক বহুদিন ধরেই উত্তপ্ত। কিন্তু সাম্প্রতিক এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও খামেনির বক্তব্য সেই উত্তেজনাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন সহ একাধিক দেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছে।
ইসরায়েল যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে এই হামলার বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে প্রতিরক্ষা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার পর ইসরায়েলের জবাব আসতে পারে যেকোনও সময়ে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
এই মুহূর্তে গাজা, লেবানন সীমান্ত, ও পারস্য উপসাগরের পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কোনও ধরনের উস্কানি পরবর্তী যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন কূটনীতিকরা।
ইরান তার হাইপারসনিক অস্ত্রভাণ্ডার সম্প্রসারণ করেছে বলেই বারবার দাবি করেছে। এবার সরাসরি ব্যবহার করে তারা সেই দাবির প্রমাণ দিল। অন্যদিকে, এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহারে আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, খামেনির “কোনও দয়া নেই” মন্তব্য কেবল একটি প্রতিক্রিয়া নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী এক প্রতিশোধনীতির ইঙ্গিত। ফিলিস্তিন ইস্যু থেকে শুরু করে ইরানের আঞ্চলিক আধিপত্যের লড়াইয়ে এই মন্তব্য এক কৌশলগত চাল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক স্তরে শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে। জাতিসংঘ, ওআইসি এবং অন্যান্য সংগঠন এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে গোটা অঞ্চল জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি এবং সামান্য ভুল পদক্ষেপ বড় সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে বিশ্বকে।
এখন সবার নজর ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের উপর। শান্তি ফিরবে না কি যুদ্ধের দামামা আরও তীব্র হবে— সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা দুনিয়ার কূটনৈতিক মহলে।