দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সঞ্জয় লীলা ভনসালি তাঁর ছবিতে আগাগোড়াই সঙ্গীতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। আর ‘হীরামন্ডি’ওয়েব সিরিজও তাঁর ব্যাতিক্রম নয়। সিরিজের প্রতিটি গানই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে শ্রোতাদের কাছে। এর মধ্যে থেকে একটি গান গেয়েছেন কলকাতার গায়িকা মধুবন্তী বাগচি। এই ওয়েব সিরিজের ‘নজরিয়া কি মারি’ এই গানটি গেয়েছেন মধুবন্তী। সিরিজ়ের সময় ও প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে গজ়ল, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ঠুংরিকেই বেছে নিয়েছেন ভন্সালী। ‘নজরিয়া কি মারি’ গানটি ঠুংরি ঘরানাতেই প়ড়ে। আর তাই সেই গানটির জন্যই মধুবন্তীকে বেছে নিয়েছিলেন ভন্সালী।
গায়িকার কথায় ‘‘এটি নির্ভেজাল একটি ঠুংরি গান। সিরিজ়ের অন্য কোনও গানকে কিন্তু সরাসরি ঠুংরি বলা যায় না। সেইগুলির মধ্যে গজ়লের ধাঁচ রয়েছে। এক মাত্র হিন্দুস্থানি ঠুংরির ঘরানায় এই গানকেই রাখা যায়। স্যার সব সময়ে আমায় বলেন, ‘তোমার ঠুংরি বেশি করে গাওয়া উচিত’। তাই বাকি কোনও গানে পৌঁছনোর আগেই এই গানের জন্যই আমার কথা ভাবেন তিনি।’’
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর একটি অ্যালবামের জন্য গান গেয়েছিলেন মধুবন্তী। গায়িকা মনে করে বললেন, ‘‘২০২৩-এর শুরুর দিকে ‘সুকুন’ নামে একটি অ্যালবাম বেরোয়। শ্রেয়া ঘোষাল, পাপন, রাশিদ খান অনেকেই গান গেয়েছিলেন। আমারও একটি গান ছিল।’’ এর কিছুদিন পরেই ‘হীরামন্ডি’র জন্য ডাক আসে। মধুবন্তী বলেন, ‘‘২০২২-’২৩-এর মধ্যেই ‘হীরামন্ডি’র জন্য স্যার ডাকেন। সিরিজ়ের গানগুলি এক এক করে শোনাচ্ছিলেন। কার গলায় কোনটা ভাল লাগবে, সেটা তিনিই বলে দিচ্ছিলেন।’’
একদম শুরুতে ভন্সালীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন জানিয়েছেন মধুবন্তী। তিনি বলছেন, ‘‘শুরুর দিকে ওঁর সঙ্গে কাজ করতে বেশ ভয়ই লাগে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে সহজ হয়। তিনিও গান বাজনা, শিল্প, সংস্কৃতি এ সব নিয়ে আলোচনা করতে ভালবাসেন। ক্রমশ ওঁর সঙ্গে সহজ হই।’’ মধুবন্তী যোগ করেন, ‘‘স্যার কাজ নিয়ে খুবই খুঁতখুতে। কিন্তু ওঁর সঙ্গে আমার প্রথম করা কাজটায় উনি রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলেন। প্রথম অ্যালবাম ‘সুকুন’-এ আমার রেকর্ডিং আগে অন্য এক গায়িকা এসেছিলেন। তাঁর রেকর্ড করা গানে কিছু জায়গা পরিবর্তন করার ছিল। সেগুলি ঠিক করতেই ৫ ঘণ্টা লেগে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও আমার রেকর্ডিং-এ স্যার এসেছিলেন। মাত্র ৪৫ মিনিটে আমার গানের রেকর্ডিং হয়ে যায়। কিন্তু সেদিন সত্যিই আমার ভয় করেছিল।’’
সাধারণত প্রথমবার শুনেই কারও গান পছন্দ করেন না সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। ক্রমশ নাকি পরিচালক নিজের মতো করে গড়ে নেন। কিন্তু মধুবন্তীর ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রথম দিন গায়িকাকে ভন্সালী বলেছিলেন, ‘‘প্রথম শুনেই কারও গান ভাল লাগছে, এমন খুব কমই হয়। ভাল লাগতে একটু সময় লাগে।’’ কিন্তু মধুবন্তীর রেকর্ডিং ৪৫ মিনিটে হয়ে যাওয়ায় তাঁর উপর ভরসা বাড়ে ভন্সালীর। আর তাই ‘হীরামন্ডি’র রেকর্ডিং-এর সময় মধুবন্তীর গান নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি তাঁকে। গানটিতে কিছু বদলও করতে হয়নি পরিচালককে। মধুবন্তী যোগ করেন, ‘‘গানটির রেকর্ডিং হওয়ার পরে তিনি নিজেই ফোন করেন এবং টানা পাঁচ মিনিট কথা বলেন। আমি সে সব শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কোনও উত্তর দিতে পারিনি।’’