Festival and celebrations

1 hour ago

Shobhabazar Rajbari Puja:শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল লর্ড ক্লাইভের হাত ধরে: জানুন ইতিহাস

Kolkata Durga Puja history
Kolkata Durga Puja history

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :কলকাতার দুর্গাপুজো আজকাল মূলত থিম পুজোর জন্য পরিচিত, তবুও বাড়ির পুজোর আকর্ষণ কম যায়নি, বিশেষ করে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। প্রতি বছর রাজবাড়ির ঠাকুরদালানের সামনে পুজোর কয়েক দিনে হাজারো মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু এই পুজোর শুরুটা কবে হয়েছিল?

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পরে রাজা নবকৃষ্ণ দেব শোভাবাজার রাজবাড়িতে এই দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। সেই পুজো আজও একই নিয়ম মেনে চলেছে। যদিও সম্পত্তি ভাগাভাগির পর পরবর্তীতে রাজবাড়িতে একই সঙ্গে দুটি পুজো চালু হয়। আড়াইশো বছরেও বেশি প্রাচীন এই পুজোর গোড়াপত্তন জানতে হলে ফিরতে হবে ইতিহাসের পাতায়।

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে পলাশির যুদ্ধে জয়ের পরে ইংরেজরা চাইল বিজয়োৎসব পালন করতে। আর এই বিজয়োৎসবের ভারই পড়ল লর্ড ক্লাইভের বিশ্বস্ত মুন্সি রাজা নবকৃষ্ণ দেবের ওপর। শোভাবাজার রাজবাড়িতে নিমেষে গড়ে উঠল ঠাকুরদালান। রাজবাড়িতে শুরু হল এক জাঁকজমকপূর্ণ দুর্গাপুজো। অনেকে বলে, রাজা নবকৃষ্ণ দেবের দুর্গাপুজো ছিল পলাশির যুদ্ধের বিজয়োৎসব। পুজোর সময় অনেক গণ্যমান্য লোকেরা এলেন। এলেন লর্ড ক্লাইভও। নাচগানের সঙ্গে থাকল সাহেব ও অতিথিদের জন্য পানভোজনের অঢেল আয়োজন। এসব সত্ত্বেও পুজো পদ্ধতি কিন্তু চলল শাস্ত্র মেনেই। সম্পূর্ণ নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে।

৩৬ বছর পর্যন্ত নবকৃষ্ণের কোনও সন্তান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বংশরক্ষার জন্য ১৭৬৮ সালে দাদার ছেলে গোপীমোহনকে দত্তক নেন। এর ১৩ বছর বাদে রাজার পঞ্চম রানি জন্ম দিলেন পুত্র রাজকৃষ্ণের। পণ্ডিতেরা গণনা করে বললেন, রাজকুমারের পক্ষে উত্তরের বাড়ি মঙ্গলজনক নয়। নবকৃষ্ণ সঙ্গে সঙ্গে গড়ে তুললেন ঠাকুরদালান সমেত দক্ষিণের ছয় মহলা বাড়ি। রাজা নবকৃষ্ণ প্রথমে উত্তরদিকের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে দক্ষিণদিকের বাড়িটাতেও ১৭৯০ সালে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। ওই বছরই সম্পত্তি ভাগাভাগি হয় গোপীমোহনের সঙ্গে রাজকৃষ্ণের। এরপর থেকেই দুই বাড়িতে আলাদা পুজো শুরু হয়। উত্তরদিক গোপীমোহনের ছেলে রাধাকান্ত দেবের আর দক্ষিণ দিকেরটি রাজকৃষ্ণ দেবের পুজো বলে চিহ্নিত হয়ে আসছে।

আড়াইশো বছর ধরে চলে আসা এই সাবেকি পুজোর জনপ্রিয়তা আজও শীর্ষে। পুজোর পাঁচ দিন তিল ধারণেরও জায়গা থাকে না ঠাকুরদালানে। কোনও থিম নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুজোর রীতি, নিয়মকানুন, বিনোদনে খানিক পরিবর্তন। এ পুজো কলকাতার ঐতিহ্যকে স্মরণ করায়। অষ্টাদশ থেকে একবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত বাঙালির সংস্কৃতিকে লালন করে আসছে এই পুজো।

You might also like!