
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েক বছর আগে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক বিশালাকার দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে গোটা বাংলাকে চমকে দিয়েছিল। সেই সময় রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছিলেন মাতৃ প্রতিমার সেই অনন্য রূপ দেখতে। এবার ঠিক তেমনই নজর কাড়তে চন্দননগরের অন্যতম পুজো কমিটি কানাইলাল পল্লী প্রস্তুত করছে রাজ্যের সবচেয়ে বড় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা।
পুজোর চার দিন চন্দননগরে দর্শনার্থীদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা থাকে না। এবছর ৫২ বছরে পা দিল কানাইলাল পল্লীর জগদ্ধাত্রী পুজো। থিমের ভিড়ে কিছু আলাদা করার ইচ্ছে থেকেই উদ্যোক্তারা এবার চমক দিতে তৈরি করেছেন রাজ্যের সবচেয়ে বড় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। সাধারণত চন্দননগরের প্রতিমার উচ্চতা থাকে প্রায় ২৬ ফুটের মধ্যে, কিন্তু সেই সীমা ভেঙে এবারে কানাইলাল পল্লীর প্রতিমার উচ্চতা ছুঁয়েছে ৭৫ ফুট। সম্পূর্ণ ফাইবার দিয়ে তৈরি এই বিশাল প্রতিমায় মণ্ডপে ফুটে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের ফাইবার কাস্টিং শিল্পের ঐতিহ্য। সেই এলাকারই দক্ষ শিল্পীদের হাতে গড়া এই সুবিশাল প্রতিমা। উদ্যোক্তাদের দাবি, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা।
পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দার জানিয়েছেন, “কলকাতায় দেশপ্রিয় পার্ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা তৈরি করেছিল । আমরা জগদ্ধাত্রী পুজোয় সেই চমক এনেছি । চন্দননগরের খর, মাটি দিয়ে যে প্রতিমা তৈরি হয় তার ওজন অনেক বেশি হয় । সবচেয়ে বড় প্রতিমা তৈরিতে তাই আমরা ফাইবার ব্যবহার করেছি। প্রতিমার উচ্চতা আনুমানিক ৭৫ ফুট। মণ্ডপের বাইরে থেকেও দর্শন করা যাবে।” বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ”এত বড় জগদ্ধাত্রী আগে কেউ কখন তৈরি করেনি। তবে প্রশাসনের তরফে মণ্ডপের উচ্চতা কমাতে বলা হয়েছিল।” তা মেনে এবং প্রশাসনের সমস্ত নিয়মকে মেনে এই প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ পোদ্দার।
কিন্তু কীভাবে তৈরি হল এই বিশাল জগদ্ধাত্রী প্রতিমা? পুজো উদ্যোক্তাদের ব্যাখ্যায়, প্রথমে মাটির আদলে তৈরি করা হয় মূল মূর্তির নকশা। এরপর রেজিন ও ফাইবারের সাহায্যে বিশাল প্রতিমার একাধিক অংশ ঢালাই করে তৈরি করা হয়। সেই ফাইবারের টুকরোগুলিকে ধাপে ধাপে লোহার ফ্রেমে জোড়া লাগিয়ে গড়া হয়েছে মা জগদ্ধাত্রী, সিংহ, হাতি ও চালচিত্রের সম্পূর্ণ অবয়ব। শুধু তাই নয়, চালচিত্রের ভেতরে ফাইবার দিয়ে নির্মিত হয়েছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের প্রতিমাও। পুজো উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ পোদ্দারের কথায়, “এবার চন্দননগরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে চলেছে আমাদের এই প্রতিমা।” তাঁর অনুমান, পুজোর দিনগুলিতে প্রতিদিনই লক্ষাধিক দর্শনার্থীর ঢল নামবে মণ্ডপে।
