Editorial

1 year ago

গর্বের ইছামতীর গর্ভে বিষ

Pride
Pride

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ   বিভূতিভূষণের ইছামতীর মৃত্যু হয়েছে বহু আগেই! যৌবনের উদ্দামতা হারিয়ে সে আজ বার্ধক্যে! সাহিত্যের হোক বা বাস্তবের একটা আবেগের নাম 'ইছামতী'। যার দু’পাড়ের অনাবিল সৌন্দর্য আজও মুগ্ধ করে। কিন্তু সেই নদীর জলেই মারণ বিষ। 

উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছিল ১৯৮০ সালে। একসময় বহু মানুষ সেই জল পান করে ক্যানসার সহ নানা মারণরোগের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যেই নতুন এক বিপদের হাতছানি! দেশে এই প্রথম কোনও নদীর জলে ভয়ানক মাত্রায় আর্সেনিক মিলেছে। যা পরিবেশের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের।

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালি এলাকায় চূর্ণী ও মাথাভাঙা নদীর সংযোগস্থল থেকে জন্ম ইছামতীর। নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট হয়ে দুই বাংলার সুন্দরবনের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়ে তা সাগরে মিশেছে। ভারত-বাংলাদেশ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী। তাই এটি একটি আন্তর্জাতিক নদীও বটে!!এই নদীর কূলে গড়ে উঠেছে বনগাঁ, টাকি ও বসিরহাট শহর।

২০২১ এর ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২২ এর ২২ মে পর্যন্ত তিন দফায় বনগাঁ ও বসিরহাট থেকে ইছামতীর জলের নমুনা সংগ্রহ করে আইআইটির নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে করা হয় পরীক্ষা। রিপোর্টে রাজ্যকে জানানো হয় গরমে বনগাঁয় ইছামতীর জলে উদ্বেগজনক হারে পাওয়া গিয়েছে আর্সেনিক। 'হু'র নির্দেশিকা অনুসারে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা ১০ মাইক্রোগ্রাম/লিটার। কিন্তু গ্রীষ্মে বনগাঁয় থানার সামনে ইছামতীর জলে প্রতি লিটারে ২৭.৮, কানাইলাল পার্কের কাছে ৩০.১ এবং বনগাঁ আপনজন মাঠ লাগোয়া ইছামতীর জলে ৩২.০৩ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি আয়রন, অ্যামোনিয়া এবং বিওডির এর পরিমাণও অত্যন্ত বেশি বলে উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। 

উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনার ২২টি ব্লকের মধ্যে ২১টিই আর্সেনিক প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম আর্সেনিক দূষণের কথা নজরে আসে। দেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই সমস্যাটি সমাধানে আদেশ জারী করলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসন একেবারেই উদাসীন!!

You might also like!