দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রীয় বাজেটের দিনগুলিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পরনের শাড়ি বিগত ২০১৯ সাল থেকে সাধারন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রতিবারই রকমারি এমব্রয়ডারিং কাজ ও বিভিন্ন রঙের শাড়ি নানান ভিন্ন গল্পের সাক্ষী। এই বছর,কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অষ্টমতম বাজেট পেশ। এই বাজেটসজ্জায় নির্মলার পরনে দেখা গিয়েছে, সাদা ও সোনালি পাড়ের মধুবনী শাড়ি। মধুবনী শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তাঁর পরনে এই শাড়ি, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। তবে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, চলতি বছরেই বিহারে নির্বাচন। সম্ভবত সে কারণে মধুবনী শাড়ি বেছে নিয়েছেন নির্মলা।
মিসেস সীতারামনের এই শাড়িটি তৈরি করেছেন পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্ত বিহারের শিল্পী দুলারি দেবী। মিথিলা আর্ট ইন্সটিটিউট তৈরি করে মধুবনী শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয় তাঁকে। দুলারি দেবী মূলত বাজেট অধিবেশনে এই শাড়িটি পরার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শ্রুতিকথা অনুযায়ী রাম ও সীতার বিয়ের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরার জন্য জনকরাজার নির্দেশে মধুবনী শিল্পের পথচলা শুরু হয়। এটি বিহারের মিথিলা অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প।এটি তার প্রাণবন্ত রং এবং প্রতীকী উপস্থাপনার জন্য পরিচিত। তবে কালের নিয়মে বদলেছে নকশার ধরন। বর্তমানে মাছ মোটিভের মধুবনী ডিজাইন বহুল পরিচিত। দক্ষ চিত্রশিল্পী দুলারি দেবী, তিনি তার চিত্রকর্মের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ, এইডস এবং ভ্রূণহত্যার মতো বিষয়ে সমাজ সচেতনতার বার্তা দিয়েছেন । মিসেস দেবী কমপক্ষে 10,000টি পেইন্টিং তৈরি করেছেন যা 50টিরও বেশি প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছে। বলাবাহুল্য, দাম বেশি হলেও সব বয়সের মহিলাদের পছন্দের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে মধুবনী শাড়ি।
"বাজেট" শব্দটি ফরাসি শব্দ "বুগেট" থেকে এসেছে, যার অর্থ চামড়ার ব্রিফকেস। "বাজেট কেস" -এর ঐতিহ্য বজায় রাখতে বাজেটের নথিপত্র বহন করার জন্য ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদী একটি স্ট্রিং দিয়ে ঘেরা জাতীয় প্রতীকের খোদাই সহ লাল কাপড়ের ফোল্ডার নির্মলা সীতারামনকে দিয়েছিলেন যা আজও ব্রিটিশ ঐতিহ্য বহন করছে। এদিন মিসেস সীতারামন রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে যাওয়ার আগে তার নর্থ ব্লক অফিসের বাইরে তাঁকে এই ঐতিহ্যবাহী শাড়িতে এবং "বাজেট কেস" হাতে দেখা গেল। বিগত সাত বছর ধরে বাজেটের পাশাপাশি নির্মলার শাড়ি নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।