দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ভোট-প্রচারের প্রথম দিন থেকেই সিএএ অস্ত্রে শান দিয়ে চলেছে বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলও সিএএ-এর বিপদ সম্পর্কে মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় প্রচার-অভিযান আরও জোরদার করছে। প্রশ্ন হলো, পঞ্চম দফার ভোটের আগে এই ইস্যুতে পাল্লা ভারী কার দিকে? গেরুয়া শিবিরের একাংশের মতে, সিএএ কার্যকর হওয়ার পর যতটা সুফল বিজেপির ঝুলিতে আসার কথা ছিল, ততটা আসছে বলে এখনও মিলছে না।
যার ইঙ্গিত মঙ্গলবার মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁয় ভোট প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষণে পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ, এদিন সিএএ-এর সুফল ব্যাখ্যা করার থেকেও শাহ এদিন বেশি সময় ব্যয় করেছেন এই ইস্যুতে তৃণমূলের ন্যারেটিভকে কাউন্টার করতে।
ভোটের ঠিক মুখে সিএএ কার্যকর হওয়ার পরই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে উদ্বাস্তুদের সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘কেউ সিএএ-এর পোর্টালে আবেদন করবেন না। আবেদন করলেই আপনার নাগরিকত্ব চলে যাবে। এ দেশে সবাই নাগরিক। নতুন করে নিজের বিপদ বাড়বেন না। আবেদনকারীদের চিহ্নিত করে এনআরসি করে দেবে বিজেপি।’
বনগাঁর তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মমতার এই বার্তা পৌঁছেও দিচ্ছেন। এদিন শাহ বনগাঁর মাটিতে জোর গলায় দাবি করেন যে, তৃণমূলের এই প্রচার মিথ্যা। শাহ বলেন, ‘মতুয়া সমাজের লোকদের বলতে এসেছি যে, দিদি মিথ্যা কথা বলছেন। তৃণমূল বলছে, সিএএ-র জন্য যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, কারও কোনও সমস্যা হবে না। নগরিকত্ব পেয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারবেন আপনারা। আমার কথা মন দিয়ে শুনুন, বিশ্বের কোনও শক্তি সিএএ ঠেকাতে পারবে না।’
সিএএ-এর উপযোগিতা নিয়ে অবশ্য সেভাবে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। অন্যদিকে, মমতাও এদিন কল্যাণীর সভা থেকে ফের ঘোষণা করেন, এ দেশে সবাই নাগরিক। বিজেপিকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘নিঃশর্ত অধিকার দাও। না হলে বিদায় নাও। আমরা সবাই নাগরিক। একটা মতুয়ার গায়েও হাত দিতে দেবো না। নিজের ধর্ম-বর্ণ, নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে চাইলে বিজেপিকে বিদায় দিন। মোদী যাক, মানুষ থাক। মোদী যাক, মনুষ্যত্ব থাক।’
সিএএ যে শুধু বিজেপির ভোট প্রচারের হাতিয়ার, তা উল্লেখ করে তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন এলেই ক্যা-র কথা মনে পড়ে। কারণ মতুয়া ভোটগুলি চাই। নির্বাচনে ওদের এনআরসির কথাও মনে পড়ে। কারণ, মানুষকে ভয় দেখাতে হবে। সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে বিভেদ বাধাতে হবে। নির্বাচন এলেই ইউনিফর্ম সিভিল কোড-এর কথা বলতে হবে!’
যদিও শাহের অভিযোগ, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব বলছেন নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্কের জন্য। অনুপ্রবেশকারীদের এ দেশের নাগরিকত্ব দিতে চায় তৃণমূল। আর যাঁরা এ দেশের নাগরিক, তাঁদের প্রতি মুহূর্তে অসম্মান করছে, দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে।’