দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর সর্বত্র মাধ্যাকর্ষণ সমান নয় - সে কথা অনেক আগেই প্রমাণ হয়েছে। কারণ পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার নয়,অনেকটা ডিম্বাকৃতি। গোলাকার হলে সর্বত্র মাধ্যাকর্ষণ সমান থাকতো। এই পর্যন্ত বিজ্ঞানমহল মেনে নিয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর বিশেষ কোনো জায়গায় মাধ্যাকর্ষণ কম! ব্যাপারটা কিন্তু বেশ বিস্ময়কর। কিন্তু এটা সত্য। আর এই সত্য খুঁজে পেয়েছেন ভারতের দুই বিজ্ঞানী। সমুদ্রের মাঝামাঝি সুবিশাল এক গর্তের হদিশ পেলেন বিজ্ঞানীরা। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সেখানে যথেষ্টই দুর্বল। তবে কি ওই গর্ত ধরে পৌঁছনো যাবে পৃথিবীর কেন্দ্রে? নাকি লুকিয়ে আছে অন্য কোনও রহস্য? সম্প্রতি ভারত মহাসাগরের মাঝামাঝি এলাকায় বিরাট একটি গর্তের খোঁজ মিলেছে এমনই খবর প্রকাশ্যে আসে। সমুদ্র বিজ্ঞানীদের দাবি, গর্তটির নীচের অংশের ভর পৃথিবীর অন্য যেকোনও জায়গার তুলনায় অনেকটাই কম। যার জেরে সেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব হ্রাস পেয়েছে বলে অনুমান গবেষকদের। ভারত মহাসাগরের গভীরে ওই গর্তের হদিশ মেলার পর ফের নতুন করে শুরু হয়েছে চর্চা। গর্তটির গভীরে পৌঁছনো গেলে মাধ্য়াকর্ষণ নিয়ে এতোদিনের ধারণায় অনেক বদল আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
কয়েক বছর আগেই পৃথিবীর কেন্দ্রভাগ নিয়ে গবেষণা শুরু করে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স। এই সংস্থার সেন্টার ফর আর্থ সায়েন্স বিভাগে চলছে এই গবেষণা। বিজ্ঞানীদের একটি টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন দুই বাঙালি ভূতাত্ত্বিক। তাঁরা হলেন, দেবাঞ্জন পাল ও আত্রেয়ী ঘোষ। দেবাঞ্জন ও আত্রেয়ীর যুক্তি, প্রাচীন সমুদ্রের তল থেকে ওই গর্তের উৎপত্তি হয়। টেকটোনিক যুগে দু'টি প্লেটের সংঘর্ষের ফলে সমুদ্র গর্ভের ওই জায়গায় ডুবে গিয়েছিল। প্রায় ১৪০ মিলিয়ন বছর আগে ধীরে ধীরে সরতে শুরু করেছিল টেকটোনিক প্লেট।
গবেষকদ্বয় বলেছেন,"আমাদের পৃথিবী কিন্তু কোনও নিখুঁত গোলক নয়। যদি এটা পুরোপুরি গোলাকার হোত, তাহলে মাধ্যাকর্ষণ ভূপৃষ্ঠের প্রতিটা বিন্দুতে সমান হোত। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মনে রাখতে হবে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেরু এলাকাই একটু চ্যাপ্টা। আর পেটের বিষুব রেখার জায়গাটি কিছুটা বাইরের দিকে বেরিয়ে এসেছে। তবে ওই গর্তের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ কেন অনেকটা কম, তা খতিয়ে দেখতে হবে।"