দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ তালিকায়ও বিতর্কিত ('দাগি') প্রার্থীদের নাম পাওয়া গেছে। এই প্রেক্ষাপটে, কলকাতা হাইকোর্ট সেই সমগ্র নামের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র নামের তালিকা প্রকাশ করলে যদি একাধিক ব্যক্তির নাম এক হয়, তবে সেই বিভ্রান্তি এড়াতে ‘দাগি’দের নামের সঙ্গে তাঁদের অভিভাবকদের নাম এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্যও প্রকাশ করতে হবে। শুনানিকালে বিচারপতির স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ ছিল, কারও নাম যদি ‘দাগি’দের তালিকায় থাকে, তবে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন না। এর সত্ত্বেও যদি কোনো প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন, তবে তাঁর নাম বাদ দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী নির্দেশের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
শনিবার রাতে এসএসসির একাদশ-দ্বাদশের ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ পায়। সেই তালিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকের নাম নেই বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এমনকী ইন্টারভিউয়ের তালিকায় ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের নাম রয়েছে বলেও অভিযোগ। এরপরেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। আজ সেই মামলার শুনানি হয়।শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা পর্যবেক্ষণে জানান, ২০১৬ এবং ২০২৫ এর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় একই ব্যক্তির রোল নম্বর ভিন্ন ভিন্ন হয়। শুধুমাত্র নাম প্রকাশ করলে কোন ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় না। একই নামের একাধিক ব্যক্তি হয়। সহজেই যাতে ‘দাগি’দের শনাক্ত করা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই সুপ্রিম কোর্ট নাম প্রকাশ করতে বলেছিল। সেই মতো বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সেই নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে নির্দেশ বিচারপতি সিনহার।অন্যদিকে কমিশনের তরফে আইনজীবী জানান, ‘দাগি’ প্রার্থীদের চারজনের নাম মামলাকারীরা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন বিশেষভাবে সক্ষম। বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীদের কিছু ছাড় সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারপতি অমৃতা সিনহা পালটা জানান, সুপ্রিম কোর্ট বিশেষভাবে সক্ষম প্রার্থীদের কিছু ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু এরা তো ‘দাগি’। এরপরেও কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বিচারপতির যুক্তি, বিশেষ সুবিধা মানে তো বয়সজনিত ছাড়। এরা তো চিহ্নিত অযোগ্য। এক্ষেত্রে কমিশনের পালটা দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে কাজ করছে এসএসসি। আদালত বারণ করলে আমরা নাম বাদ দিয়ে দেব।যদিও সুপ্রিম নির্দেশ মেনে কমিশন দাগিদের তালিকা প্রকাশ করেনি বলে অভিযোগ করেন মামলাকারীদের আইনজীবী। এমনকী সেই তালিকায় নির্দিষ্টভাবে ‘দাগি’দের শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন। তবে মামলাকারীদের দাবি মেনে তালিকা প্রকাশে কমিশন যে বাধ্য নয় পালটা জানান এসএসসির আইনজীবী। আগামী ৩ ডিসেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে।