
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: শীতকাল এলেই বাজার ভরে ওঠে টাটকা সব্জির রঙিন সমারোহে। রাঙা আলু, পালং শাক, ফুলকপি, শিম, মটরশুঁটি, দেশি টম্যাটো, রসুনপাতা— বাজারে গেলে ব্যাগভর্তি করে সব্জি না কিনে থাকা কঠিন। শীতের মৌসুমি সংক্রমণ প্রতিরোধে সব্জির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই মাছ–মাংস–ডিমের পাশাপাশি শুক্তো, পালংশাকের ঘণ্ট কিংবা পাঁচমিশেলি সব্জির মতো পদ শীতকালে খাদ্যতালিকায় থাকা চাই। প্রতিদিন সব্জি খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই, কারণ সব্জিতে থাকে প্রচুর ফাইবার, যা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক।
তবে সব্জির রান্নায় একটু বাড়তি সতর্কতা জরুরি। রান্নার সময় সামান্য ভুল হলে শুধু স্বাদই নষ্ট হয় না, নষ্ট হয় সব্জির পুষ্টিগুণও। ফলে নিয়মিত সব্জি খেয়েও কাঙ্ক্ষিত উপকার পাওয়া যায় না। সব্জি দিয়ে ডাল, শাকভাজা কিংবা অন্য কোনও পদ— কোন ভুলগুলি এড়াতে হবে শরীর ভাল রাখতে?
সব্জি বেশি ক্ষণ কেটে রাখা: চটজলদি কাজ সারার জন্য অনেকেই আগের দিন রাতে শাকসব্জি কেটে ফ্রিজে রেখে দেন। এই অভ্যাস কিন্তু মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। সব্জি আগে থেকে কেটে রাখলে অক্সিডেশন বা জারণের কারণে সব্জিতে থাকা ভিটামিনের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই যখন রান্না করবেন, তার আগেই সব্জি কাটুন।
খোসা ছাড়িয়ে সব্জি ধোয়া: অনেকেই খোসা ছাড়ানোর পর সব্জি ভাল করে ধুয়ে নেন। এই কারণে কিন্তু সব্জির যাবতীয় গুণাগুণ জলে ধুয়ে যেতে পারে। তাই লাউ, পটল, ঝিঙে, বিট, গাজরের মতো খোসাযুক্ত সব্জিগুলি আগে ভাল করে ধুয়ে, তার পরেই কাটা ভাল।
আঁচ বাড়িয়ে রান্না: বেশি আঁচে রান্না করলে পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। সব্জির গুণমানও নষ্ট হয়ে যায়। স্বাদও ভাল হয় না। তাই রান্নার শুরু থেকে আঁচ কম করে রাখুন। প্রয়োজনে একটু বেশি করতে পারেন। তবে বেশি ক্ষণের জন্য নয়। যত সময় ধরে খাবার সেদ্ধ হয়, ততই শরীরের জন্য ভাল।
কষিয়ে রান্না: লুচি কিংবা পকোড়া ভাজার বিষয়টি আলাদা। কিন্তু রোজের সব্জি রান্নায় তেল যতটা সম্ভব অল্প ব্যবহার করুন। বেশি তেল দেওয়া রান্না হয়তো সুস্বাদু হয়। কিন্তু সব্জির গুণ বলে আর কিছুই থাকে না। তাই শাকসব্জি রান্নার সময় কড়াইয়ে সতর্ক হয়ে তেল ঢালুন। স্বাস্থ্যের কথা ভাবলে সেদ্ধ করা, অল্প তেলে রান্না করা সব্জিই খেতে হবে। মশলাপাাতি দিয়ে কষিয়ে রান্না করলে চলবে না।
বিদেশি সব্জির ব্যবহার: অনেকেই এখন জ়ুকিনি, চেরি টম্যাটো, অ্যাসপ্যারাগাস, কেল, সেলেরির মতো বিদেশি শাকসব্জি কেনেন স্বাস্থ্যের কথা ভেবে। পুষ্টিবিদদের মতে, স্থানীয় এলাকায় যে সব্জির চাষ হচ্ছে তাতেই লুকিয়ে থাকে হাজার পুষ্টিগুণ। শপিং মল থেকে ফ্রোজ়েন সব্জি কেনার কোনও মানে নেই, তাতে পুষ্টিগুণ থাকে না বললেই চলে।
