দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: শীতকালীন সবজির মধ্যে ব্রোকলি বা ‘সবুজ ফুলকপি’ এখন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের প্রথম পছন্দ। ভিটামিন-সি, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই সবজি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে অনেকেই জানেন না, ব্রোকলি চাষ করা চরম জটিল নয়; এটি ফুলকপির মতোই সহজে বাড়িতে বা টবে চাষ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রোকলি চাষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উর্বর এবং ঝুরঝুরে মাটি। মাটির উর্বরতা ও পুষ্টিসমৃদ্ধি ঠিক থাকলে ছোট একটি টবেও বড় আকারের সতেজ ব্রোকলি পাওয়া সম্ভব।
টবে ব্রোকলি চাষের জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করা যেতে পারে:
মাটি তৈরির সঠিক মিশ্রণ: চারা রোপণের অন্তত ৭-১০ দিন আগে মাটি তৈরি করে রাখা ভালো। আদর্শ মিশ্রণটি হবে নিম্নরূপ:
দোআঁশ মাটি: ৫০ শতাংশ (পুরনো পরিষ্কার মাটি হলে ভালো)।
গোবর সার বা ভার্মিকম্পোস্ট: ৩০ শতাংশ (জৈব সারের পরিমাণ বেশি হলে ফলন ভালো হয়)।
কোকোপিট বা কাঠের গুঁড়ো: ১০ শতাংশ (মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে)।
বালি: ১০ শতাংশ (জল নিকাশি ব্যবস্থা ভালো রাখার জন্য)।
অতিরিক্ত পুষ্টি: এর সঙ্গে এক মুঠো নিম খোল এবং এক চামচ হাড়ের গুঁড়ো মিশিয়ে দিলে গাছে পোকা ধরার ভয় কম থাকে এবং গাছের গঠন মজবুত হয়।
টব নির্বাচন ও চারা রোপণ: ব্রোকলির জন্য অন্তত ১০-১২ ইঞ্চির টব ব্যবহার করা উচিত। টবের নিচে অবশ্যই জল বেরোনোর ছিদ্র থাকতে হবে। মাটি তৈরির পর চারা গাছটি আলতো করে বসিয়ে দিন। মনে রাখবেন, ব্রোকলি চারা খুব বেশি গভীরে পোঁতা উচিত নয়।
পরিচর্যার বিশেষ টিপস: ১. রোদ: ব্রোকলি রোদ খুব পছন্দ করে। তাই টবটি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে দিনে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা কড়া রোদ পায়। ২. জল: গোড়ায় যেন জল না জমে, আবার মাটি যেন একেবারে শুকিয়েও না যায়। আর্দ্রতা বুঝে জল দিন। ৩. তরল সার: গাছ একটু বড় হলে ১৫ দিন অন্তর খোল পচা জল দিলে ফলন আশাতীত ভালো হবে।
ব্রোকলি গাছে সাধারণত পোকার উপদ্রব দেখা যায়। এর প্রতিকারে রাসায়নিক বিষ ব্যবহার না করে নিম তেল স্প্রে করা বেশি নিরাপদ। ব্রোকলির মূল ফুলটি তুলে নেওয়ার পর ছোট ছোট ডাল থেকেও আবার ছোট ছোট ফলন পাওয়া যায়, তাই গাছ একবারে উপড়ে ফেলবেন না।
