
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: শহরের কেন্দ্রস্থলে পাঁচ লক্ষ মানুষের একত্রিত কণ্ঠে গীতাপাঠ চলছে। সকলে মিলে পবিত্র শ্লোক উচ্চারণ করছেন। তবে, ধর্মীয় বিধি অনুসারে, কেবলমাত্র একদিন নয়, বরং পারলে প্রতিদিন গীতাপাঠ করা বিধেয়। গীতাপাঠ করলে আপনার কী কী সুবিধা হয়, সেই সম্পর্কে আপনার কি কোনো ধারণা আছে?
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি—
আমাদের চারপাশের দুনিয়া দ্রুত পরিবর্তনশীল। সেখানে অনেক বিষয় মনে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। নিয়মিত গীতাপাঠের মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পড়াশোনার অভ্যাস তৈরি হয়। স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধি—
কথায় বলে, ‘যেমন শরীরের জন্য ব্যায়াম প্রয়োজন, তেমনই মনের জন্য প্রয়োজন পড়াশোনা।’ আজকের ডিজিটাল দুনিয়ায় কমে আসছে পড়ার অভ্যাস। রিলস আর শর্টস দেখে কমছে মানুষের ধৈর্য। সেখানে প্রতিদিন গীতাপাঠের মতো অভ্যাস আমাদের মনোযোগ এবং একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে।
বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে—
যত বেশি পড়ার অভ্যাস হবে, বিভিন্ন মতামত ও ভাবনার সঙ্গে পরিচয় বাড়বে। বিশেষ করে আধ্যাত্মিক বই আমাদের সামনে এমন অনেক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারে, যার সম্পর্কে আমরা আগে জানতামই না। তা নতুন ভাবে দুনিয়াকে দেখতে শেখায়। নতুন করে ভাবতে শেখায়। কোনও বিষয়কে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও বাড়ে।
কর্তব্য পালন—
অনেক সময়ে আমরা আবেগে ভেসে গিয়ে দায়িত্বকে উপেক্ষা করি। আবেগ পরিবর্তনশীল, কিন্তু দায়িত্ব অবহেলা করলে তার ফলাফল হয় অপ্রিয়। শ্রীমদ্ভগবদগীতা দায়িত্বের প্রতি একনিষ্ঠ থাকার উপদেশ দেয়। আমাদের নিজ দায়িত্ব পালন করতে উদ্বুদ্ধ করে।
নিজের শক্তিকে চিনতে সাহায্য করে—
আমাদের সকলের মধ্যেই জন্মগত কিছু শক্তি থাকে। সেটা কঠিন সময়ের সঙ্গে লড়ার শক্তি বা বিপদের মুখে সকলকে নিয়ে এগিয়ে চলার শক্তি। কিন্তু অনেক সময়ে আমরা নিজেরাই সেই সম্পর্কে খুব একটা অবগত থাকি না। গীতাপাঠ নিজেকে আরও ভালো ভাবে জানতে, বুঝতে সাহায্য করে। নিজের অন্তরের ভয় কাটিয়ে সাহসী করে তোলে।
সুষ্ঠু জীবনযাপন শেখায়—
অতিরিক্ত কাজের চাপে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আবার অতিরিক্ত অলসতা আমাদের কর্মশক্তিকে নষ্ট করে দেয়। তাই জীবনে কাজ ও বিশ্রামের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীমদ্ভবদগীতা খাদ্য, কাজ এবং বিশ্রামে শেখায় কী ভাবে সেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়।
কাজের গুরুত্ব—
অনেক সময় আমরা সমস্যার কথা ভেবে বসে থাকি। কিন্তু কাজ শেষ করার জন্য কোনও পদক্ষেপ করি না। ফলাফলের চিন্তা না করে কর্তব্য পালন করাই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির গোপন উপায়। গীতাতে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে শিখিয়েছিলেন, কী ভাবে নিঃস্বার্থ ভাবে নিজের কাজ শেষ করতে হয়। প্রতিদিন গীতাপাঠ করলে আপনিও নিজের কর্তব্য সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে উঠবেন।
