
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: থাইরয়েড গ্রন্থির অনিয়মিত কার্যকারিতা থেকে উদ্ভূত জটিল রোগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গলার কাছে প্রজাপতির মতো আকারের এই গ্রন্থি শরীরের সামগ্রিক বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। যখন থাইরয়েড অত্যধিক সক্রিয় হয়ে ওঠে, সেই অবস্থাকেই বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজম। এর একটি বিশেষ এবং তুলনামূলকভাবে জটিল রূপ হলো গ্র্যাভস রোগ। চিকিৎসকদের মতে, গ্র্যাভস রোগে আক্রান্ত হলে অনেক সময় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভ্রান্ত হয়ে শরীরের নিজস্ব অঙ্গকেও আক্রমণ করতে শুরু করে। এতে চোখ বিশেষভাবে আক্রান্ত হতে পারে। এই অবস্থাই পরিচিত থাইরয়েড আই ডিজিজ বা গ্র্যাভস অপথ্যালমোপ্যাথি নামে।
লক্ষণগুলি কী কী?
১) চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসা: এটি থাইরয়েড আই ডিজিজের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ। মনে হবে যেন চোখ দুটি বাইরের দিকে অস্বাভাবিকভাবে ঠেলে বেরিয়ে এসেছে। চোখের পেছনের পেশি এবং টিস্যুতে ফোলা ও প্রদাহ সৃষ্টি হলে এমন হয়।
২) চোখের পাতা উপরে উঠে থাকা: থাইরয়েডের প্রভাবে চোখের পাতা উপরে উঠে যায়। ফলে চোখ স্বাভাবিকের চেয়ে বড় ও বিস্ফারিত দেখায়। চোখের এই পরিবর্তনকে ‘স্টার গেজিং অ্যাপিয়ারেন্স’ বলা হয়।
৩) চোখের লালভাব ও শুষ্কতা: রোগীর চোখে তীব্র জ্বালা অনুভূত হতে পারে। চোখ অতিরিক্ত লাল হয়ে যায়। এছাড়া চোখ থেকে জল পড়া বা শুষ্কতার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৪) ডাবল ভিশন: চোখের পেশিগুলি এই রোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেশি দুর্বল ও স্ফীত হওয়ার কারণে চোখ দুটো একই সঙ্গে নড়াচড়া করতে পারে না। ফলে রোগী একটি বস্তুকে দুটি দেখতে পান।
৫) চোখের চারপাশে ফোলা ভাব: চোখের চারপাশে বা পাতার অংশে ফোলা বা পাফিনেস দেখা যায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এই ফোলা ভাব আরও স্পষ্ট হয়।
জরুরি সতর্কতা-
এ ধরনের চোখের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত সতর্ক হওয়া জরুরি। নিজে থেকে কোনও ওষুধ ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এটি শুধুমাত্র চোখের সমস্যা নয়—বরং একটি গুরুতর অটোইমিউন রোগের সংকেত হতে পারে। তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
