দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক মহাশক্তি – যুক্তরাষ্ট্র ও চিন – এক কঠিন বাণিজ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রয়েছে। একে অন্যের পণ্যে বারবার শুল্ক আরোপ করে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে জেনেভায় অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে তিন মাসের জন্য ‘যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণাকে অনেকে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন। এই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগে যে, চিন সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে অনৈতিক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করছে এবং মার্কিন প্রযুক্তি চুরি করছে এর ফলে একাধিক দফায় আমেরিকা চিনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করে। পাল্টা জবাবে চিনও মার্কিন কৃষিপণ্য ও শিল্পপণ্যে শুল্ক বসায়। তিন মাসের এই ‘শান্তিচুক্তি’ বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিবেশে আশার আলো দেখাচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি, কৃষি এবং গাড়ি শিল্পে।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত বর্তমান ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপ করা ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। উভয় দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ১৪ মে থেকে শুল্কের এই কাঁটছাট কার্যকর হবে।যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে স্কট বেসেন্ট বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি যে, আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই পক্ষের প্রতিনিধিদলই একমত হয়েছে যে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না। এই প্রসঙ্গে মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের পথে অগ্রসর হওয়া এবং এটি তারই সূচনা।
ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে চীনের উচিত হবে ফেন্টানিল নামক ভয়াবহ মাদকের অবৈধ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। এ বিষয়ে চীনের সদিচ্ছা দেখে ওয়াশিংটন আশাবাদ প্রকাশ করেছে।