দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: খাবারের স্বাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে নুনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই নুন সর্বদাই স্বাদ অনুযায়ী ব্যবহৃত হয়। কিন্তু পরিমানের বাইরে অতিরিক্ত নুন খেলে শরীরের গুরূতর ক্ষতি হয়। নানান ধরনের সমস্যা লক্ষ্য করা যায় শরীরে। অতিরিক্ত নুন শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড কমিয়ে দেয় ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স বিগড়ে যায়, ফলত শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে সীমিত পরিমাণে নুন খেলে ফ্লুইড ব্যালেন্স, নার্ভ ফাংশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত নুন সেবনে শরীর মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এক দিনে কতটা নুন খাওয়া সঠিক? বিশেষজ্ঞদের মতে, নুনে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড থাকে। সোডিয়াম এবং ক্লোরাইড শরীরে জল এবং খনিজ পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখার কাজ করে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবন ক্ষতিকর হতে পারে। অতিরিক্ত নুন খেয়ে ফেলেন তবে বেশি করে জল পান করুন, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান, ফল, সবজি, বাদাম ইত্যাদি খান। এছাড়া টাটকা ফলও খেতে পারেন।
কী কী ক্ষতি হতে পারে, যেমন,
১) উচ্চ রক্তচাপ: প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নুন খেলে মানুষের রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। নুনে সোডিয়াম থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এর বেশি সেবন করলে শরীরে জল জমা হতে শুরু করে, যার ফলে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং রক্তনালীগুলিতে চাপ পড়তে শুরু করে এবং মানুষের রক্তচাপের সমস্যা হতে শুরু করে।
২) হার্টের রোগ: প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নুনের সেবন করলে মানুষের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যার কারণে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং হার্ট ফেলিওরের মতো হার্টের রোগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
৩) অস্টিওপোরোসিস: অতিরিক্ত নুন এবং অতিরিক্ত প্রোটিনের সেবন মূত্রে ক্যালসিয়ামের নির্গমন বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে হাড়ে ক্যালসিয়ামের ক্ষয় হতে শুরু করে। এভাবে বেশি নুন অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে হাড় দুর্বল হতে শুরু করে।
৪) পেশীতে ব্যথা: অতিরিক্ত নুন পেশীর সংকোচন, স্নায়ুর কাজ এবং রক্তের পরিমাণ সংকুচিত করার কাজ করে। এটি আপনার শরীরে তরলের স্তর নিয়ন্ত্রণ করে যা পেশীতে ব্যথার কারণও হয়।
৫) কিডনির ক্ষতি: কিডনি শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আপনি কি জানেন খুব বেশি নুন খেলে কিডনির উপর চাপ পড়তে পারে, যার ফলে এর কার্যকারিতা খারাপ হতে পারে এবং সময়ের সাথে সাথে এটি খারাপ হতে পারে।
৬) ডিহাইড্রেশন: যদি আপনি বেশি নুন খান তবে এর ফলে আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। বেশি সোডিয়ামের সেবনে বেশি ঘাম হতে পারে, বেশি প্রস্রাব হতে পারে, খুব বেশি বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি ডিহাইড্রেট হতে পারেন।
৭) পেটের সমস্যা: বেশি নুনের সেবন করলে পেট ফোলার সমস্যা হতে পারে। আসলে, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নুনের সেবন করলে শরীরে অতিরিক্ত জল জমা হতে শুরু করে। যার ফলে পেট ফোলার সমস্যা বা পেট টাইট হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
কতটা নুন খাবেন, শরীরের জন্য কতটা নুন প্রয়োজনীয় তা অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে গ্ৰহণ করুন।