দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: শুরু হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। হালকা শীতের পরশে আয়োজিত এই বই উৎসব শুরু হয়েছে ২৮ জানুয়ারি থেকে চলবে ৯ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা প্রাঙ্গণে থাকছে হাজারেরও বেশি বইয়ের স্টল। এই বইমেলায় প্রথম বারের মতো থিম কান্ট্রি হয়েছে জার্মানি। তবে এবারের বইমেলায় প্রত্যেক বারের ন্যায় নানান দেশের স্টল থাকলেও থাকছে না বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। আবেদন পত্র জমা নেওয়ার সময়ই বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে একপ্রকার ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন প্রকাশনা সংস্থার তরফ থেকে আবেদন পত্র জমা পড়েনি। তাই এবারের ৪৮ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা পড়শি দেশ অনুপস্থিত। বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসেনি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের অনুপস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে বেশ কড়া ভাষায় মন্তব্য করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এদিন তিনি লেখেন, 'এবারের কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন নেই। বাংলাদেশের বইমেলায় কোনওদিন কি পশ্চিমবঙ্গ প্যাভিলিয়ন থাকে? থাকে না। থাকে না, কারণ, থাকাটা নিষিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত কোনও বইও বাংলাদেশের বইমেলায় থাকে না। থাকে না ব্যাপারটা এখন তুমিও যাবে না, আমিও যাবো না, বুঝলে নটবর গোছের হয়েছে।'
তসলিমা এদিন তাঁর সমাজ মাধ্যমে লেখেন, 'আমি উদারতায় বিশ্বাসী। পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ তার মেলায় এতকাল ঢুকতে না দিলেও পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে ঢুকতে তো দিয়েছেই, রীতিমত জামাই আদরে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের নিঃস্বার্থ ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু এত উদারতা দেখেও উদারতা শেখেনি বাংলাদেশ। কিছু লোক আছে, অন্যের বাড়িতে বছরের পর বছর নেমন্তন্ন খেয়ে বেড়ায়, কিন্তু অন্যকে কখনও নিজের বাড়িতে নেমন্তন্ন করে না। এমন বন্ধু কিন্তু থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল। আগে উদারতা শিখুক, সমতা শিখুক, তারপর না হয় হাতে হাত রাখা যাবে।'
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিগত ২৮ বছর ধরে বাংলাদেশ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশ নিয়ে আসছে। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার স্টল দিয়েছিল। এই বছর তাতে ছেদ পড়ল। বাংলাদেশের অন্দরে যে অচলাবস্থা চলছে সেটার জন্যই এবার বুক সেলার্স গিল্ড কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশকে জায়গা দেয়নি। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছেন উক্ত গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়।