Festival and celebrations

4 hours ago

22nd Shrawan:আজ বাইশে শ্রাবণ: শেষের কবিতায় লেখা অমরতার গল্প, রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে নতুন জীবনের বর্ণনা

22nd Shrawan
22nd Shrawan

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :আজ বাইশে শ্রাবণ, বাংলা ১৩৪৮ সালের এই দিনে প্রয়াণ ঘটেছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর–এর। মৃত্যুর পরও তাঁর ভাবনা, আদর্শ, ও সাহিত্য আজও সমানভাবে আলো ছড়ায়। রবি ঠাকুরের প্রয়াণ হয়েছিল শান্তিনিকেতনে, যেখানে তিনি নিজেই চেয়েছিলেন তাঁর শ্রাদ্ধ হোক বিনা আড়ম্বরে, নির্জনে, ছাতিমগাছের তলায়।

এই অনন্য ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শান্তিনিকেতন আজও পালিত করে বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস এক অন্যরকম রঙে—বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে। ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ থেকে প্রতি বছর বাইশে শ্রাবণ দিনটিকে ধরা হয় বৃক্ষরোপণ উৎসব হিসেবে, যেখানে শোকের বদলে জায়গা নেয় নতুন প্রাণের আহ্বান।

রবীন্দ্রনাথ জীবদ্দশাতেই এই উৎসব পালন করতেন। ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখে তিনি নিজের হাতে পঞ্চবটী (বট, অশ্বত্থ, অশোক, বেল, আমলকি) রোপণ করেন শান্তিনিকেতনের উত্তরায়ণে। তাঁর মৃত্যুর পর সেই বৃক্ষরোপণের দিনটিই হয়ে ওঠে আজ বাইশে শ্রাবণ।

উৎসবের সূচনালগ্নে কলাভবনের ছাত্রছাত্রীরা জোগাড় করেন আশ্রম চত্বরের ফুল, যার থেকে তৈরি হয় পঞ্চকন্যার অলংকার। পঞ্চকন্যারা এই অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে পঞ্চভূতের প্রতিনিধিত্ব করেন। অন্যদিকে, পাঠভবনের ছোট ছাত্রছাত্রীরা পঞ্চভূতের সাজে অংশ নেয়।

পঞ্চভূত—ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম—এই পাঁচ উপাদানের উপকরণ থাকে তামার পাত্রে। যেমন, মাটির পাত্রে ক্ষিতি, জলে অপ, প্রদীপে তেজ, তালপাতার পাখায় মরুৎ, আর শঙ্খে ব্যোম। এই সব উপাদান নিয়ে সুসজ্জিত শোভাযাত্রা চারাগাছকে পৌঁছে দেয় নির্ধারিত স্থানে।

একজন অধ্যাপক বলেন, “এই অনাড়ম্বর অথচ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যেই রবি ঠাকুরের প্রয়াণ দিনের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে আছে। আলপনার রঙে, পঞ্চভূতের শ্রদ্ধায়, চারাগাছের প্রাণে ধরা পড়ে জীবনের জয়।”

যদিও বর্তমান সময়ে কিছু পরিবর্তন এসেছে। পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম, তবুও বিশ্বভারতী আশাবাদী যে আগামীতে উৎসব ফিরে পাবে তার প্রাণচাঞ্চল্য। আজকের বাইশে শ্রাবণ শুধু শোক নয়, বরং নতুন প্রাণের শপথ।

বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস আজ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মৃত্যু নয়, সৃজনই রবীন্দ্রনাথের মূলমন্ত্র। শান্তিনিকেতনের এই উদ্ভিন্ন ভাবনাই প্রমাণ করে, রবি ঠাকুর চিরকাল জীবন্ত।


You might also like!