দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- চলছে বাঙালির বড় উৎসব দুর্গাপুজোর
কাউন্টডাউন। হাতে আর মাত্র ২১ দিনের অপেক্ষা। এরপরই ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়িতে
আসবেন মা উমা। আনন্দে সামিল হবেন আপামর বঙ্গবাসী। তেমনই পূর্ব মেদনিপুর জেলার
নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট গ্রামেও প্রত্যেক বছর ধুমধাম করে পুজো হয়। বহু বছর ধরে চলে
আসছে 'চিন্ময়ী মায়ের' পুজো। চিন্ময়ী হল আসলে মা দুর্গা। তবে এই পুজো শুরু হওয়ার নেপথ্যে
রয়েছে এক ইতিহাস। রয়েছে জাত-পাত দূরে সরিয়ে রেখে মায়ের আরাধনার গল্প।
তমলুকের রাজার এক ব্যবস্থাপক তাঁরা মায়ের চোখের জল মোছাতে
'চিন্ময়ী মায়ের' আরাধনা শুরু করেছিল। তাঁর নাম হল স্বার্থকরাম। ব্যবত্তারহাট গ্রামের
বাসিন্দা তিনি। মাকে খুশি করতে মায়ের আরাধনা শুরু করেছিল আজ থেকে বহু বছর আগে। স্বার্থকরাম
ছিলেন তাম্রলিপ্তি অধুনা তমলুকের রাজা তাম্রধবজ রাজার ব্যবস্থাপক।
আজ থেকে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ বছর আগেকরা কথা! নন্দকুমারের
ব্যবত্তারহাটে এক মহিলা পাশের গ্রামে দুর্গাপুজোয় অঞ্জলি দিতে গিয়েছিলেন। মনে ছিল
অনেক আশা যে মায়ের কাছে অঞ্জলি দিয়ে নিজের ইচ্ছের পূরণ করবেন। বুক ভরা আশা নিয়ে মন্দিরে
অঞ্জলি দিতে গেলেও তা আর শেষ পর্যন্ত করা হয় নি সেই মায়ের। কেননা জাতের দোহাই দিয়ে
মন্দিরে অঞ্জলে দিতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় অপমানও করা হয় তাঁকে। অপমান
সহ্য করতে না পেরে কান্নায় ফেটে পড়েন ঐ মহিলা। বাড়ি ফিরে এসে সব ঘটনা খুলে বলেন ছেলেকে।
মনের দু:খে ভেঙে পড়েন সেই মহিলা। ভাবেন কোনদিন কী মায়ের অঞ্জলি দিতে পারবেন না ? ঠিক তখনই ছেলে বলে ওঠেন মা দুর্গার আরাধনায় উঁচু নিচু জাত আবার কীসের ? কিন্তু মুখে বললে তো হবে না। মায়ের অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের বাড়িতে শুরু করেন দুর্গাপুজো। বাড়িতে শুরু হয় চিন্ময়ী মায়ের আরাধনা। সেই থেকে আজও নন্দকুমারের ব্যবত্তাহাটের ব্যবত্তাবাটিতে হয়ে চলেছে মায়ের পুজো।